Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হিন্দু শিক্ষার্থীদের গরু খাওয়ানোয় বিদ্যালয় ঘেরাও, এলাকায় উত্তেজনা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৫০ PM
আপডেট: ২৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৫০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক বনভোজনে হিন্দু শিক্ষার্থীদের গরুর মাংস খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের গরুর মাংস খাওয়ানোর ঘটনাটি গ্রামবাসীদের মধ্যে জানাজানি হলে এলাকাবাসী প্রথমে বিদ্যালয় ঘেরাও করে প্রতিবাদ করে। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাশ বর্জন করে। পরে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, উপজেলার ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক বনভোজন উপলক্ষ্যে শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা উঠিয়ে গাজীপুরের সাফারি পার্কে যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিন্দু ধর্মালম্বী ২২জন শিক্ষার্থীও ছিল। পিকনিকে দুপুরে খাওয়ার জন্য গরুর মাংসের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে, সেখানে হিন্দু শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোন খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। এ সময় হিন্দু শিক্ষার্থীরা খাওয়ার পর জানতে পারে যে তারা গরুর মাংস খেয়েছে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে হিন্দু শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একজন জানান, "পিকনিকে গাজীপুরের সাফারি পার্কে যাওয়ার জন্য ৩শ’ টাকা করে চাঁদা দিয়েছি। গরুর মাংসের কথা প্রধান শিক্ষক স্যারকে জানালে তিনি বলেন, "একদিন খেলে কিছু হবে না, খাবি না তা আসলি কেন?" পরে বিষয়টি আমাদের অভিভাবকদের অবহিত করি। এ ঘটনায় সোমবার প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে আমরা ক্লাশ বর্জন করেছি"।

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা হিন্দু-বৈদ্য-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সরন দত্ত বলেন, "পিকনিকের নামে হিন্দু শিক্ষার্থীদের গরুর মাংস খেতে দেয়া ঠিক হয়নি। প্রধান শিক্ষক হিন্দু শিক্ষার্থীদের আলাদা খাওয়ার ব্যবস্থা করেননি। এতে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলে বিদ্যালয় ঘেরাও করে এর প্রতিবাদ করেছে"।

উপজেলার ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাহেরুল ইসলাম তোতা এ প্রসঙ্গে বলেন, "বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার ইউএনও, ওসিসহ এলাকার লোকজন নিয়ে জরুরি মিটিং করবো। সেদিন এর একটি সুষ্ঠ সুরাহা করা হবে।"

এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম বলেন, "প্রধান শিক্ষক হিন্দু শিক্ষার্থীদের গরুর মাংস খেতে দিতে পারেন না। তারপরও যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর ইকবালের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

ভূঞাপুর থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, "পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয় এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে"।

Bootstrap Image Preview