Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

তিন রাতে পুলিশের মোটরসাইকেলসহ উধাও তিনটি গাড়ি

মহিনুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:০৯ PM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:০৯ PM

bdmorning Image Preview


নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় তিনদিনের ব্যবধানে পাশাপাশি স্থানে তিনটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলসহ দুটি মোটরসাইকেল ও একটি ব্যাটারী চালিত অটোবাইক রয়েছে।

এখন পর্যন্ত চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল ও অটোবাইকের কোনটি উদ্ধার করতে পারেনি ডিমলা থানা পুলিশ।
তাই এসব ঘটনায় এলাকাবাসী রয়েছে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও।

এলাকাবাসী বলছেন, তিনদিনে তিন চুরির এমন ঘটনা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়েও বিরল এবং পুলিশের মোটরসাইকেল যেখানে চুরি হয়েছে সেখানে সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। 

জানা গেছে, নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে শাহিনুর ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের রুপাহারা গ্রামের শশুর ওয়াজেদ আলীর বাড়িতে থেকে ব্যাটারী চালিত অটোবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।

শনিবার (২৬ জানুয়ারি) ভোররাতে সেই বাড়ি থেকে তার অটোবাইকটি চুরি হয়।

এর আগে শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ডিমলা থানায় চাকরিরত পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল নম্বর-২৬৪) সফিকুল ইসলাম অসুস্থ সহকর্মী আনোয়ার হোসেনকে দেখতে নিজ ব্যবহৃত মোটরসাইকেলযোগে ডিমলা উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। এ সময়ে সফিকুল ইসলাম তার ব্যবহৃত কালো ও লাল রঙ্গের ডিসকভার ১০০সিসি (নম্বরবিহীন) মোটরসাইকেলটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে রেখে মাত্র পাচ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয়তলা হতে নিচে নেমে দেখেন তার মোটরসাইকেলটি সেখান থেকে উধাও।

পরে আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মোটরসাইকেলটির কোনো সন্ধান না পেয়ে তিনি নিশ্চিত হন তা চুরি হয়ে গেছে।

অপরদিকে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার নুনা গ্রাম দোহপাড়া গ্রামের মৃত,আব্দুল বাকির ছেলে ও কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস ঔষধ কোম্পানির ডিমলা প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টিভ) মোজাহারুল ইসলাম উপজেলার দক্ষিন তিতপাড়া মেডিকেল মোড় এলাকার মিন্টার হোসেনের বাসায় ভাড়া থাকেন। সে বাসার বারান্দা থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) মধ্যরাতে প্রধান গেটের তালা ভেঙ্গে তার ব্যবহৃত রানার-১১০সিসি ঢাকা মেট্রো-হ-২৬২২৭২ নম্বরের লাল রঙ্গের মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায় চোর

এ ঘটনায় তিনি ডিমলা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করলেও এখনো কোনো সুফল পাননি।

এসব চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজ উদ্দিন শেখ প্রথমে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও পরে তিনি কৌশল অবলম্বন করে বলেন, যে পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলটি চুরির কথা বলা হচ্ছে তা আসলে চুরি হয়নি। অপর এক পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেলটি না বলে ভুলবশত নিয়ে গিয়েছিলেন, যা পরে পাওয়া গিয়েছে।

তবে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলের মালিক পুলিশ সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি এখনো পাওয়া যায়নি।

আমার চুরি যাওয়া গাড়িটির চাবি আমার কাছেই রয়েছে, কিভাবে অন্য পুলিশ সদস্য তা নিয়ে যাবে?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার-ডিমলা) সার্কেল জয়ব্রত পাল বলেন, এ বিষয়টি আমি গিয়ে দেখে যদি সত্যতা পাই তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এদিকে ডিমলা থানার একাধিক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুলিশের চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি এখনো পাওয়া যায়নি। এমনকি পুলিশের ইমেজ নষ্ট হবার দোয়াই দিয়ে মোটরসাইকেলটির মালিক উক্ত পুলিশ সদস্যকে কাউকে কিছু না বলার কথা বলা হচ্ছে।

এদিকে মোটরসাইকেলটি হারানোর শোকে পুলিশ সদস্য সফিকুল বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে উপজেলার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা নেন সহকর্মীরা। তবে চুরিকৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তারা। 


 


 

Bootstrap Image Preview