Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাতারের কারাগারে ১৪৯ বাংলাদেশি

হাসান বখস, কাতার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:৪৮ PM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:৪৮ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


কাতারের কারাগারে বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আসামির সংখ্যা ১৪৯ জন। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন মদ-গাঁজা সম্পর্কিত অপরাধের দায়ে। এমন অপরাধে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৭০ জন। কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দূতাবাসের প্রকাশিত এক হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে কাতারের কারাগারে মদ-গাঁজা ছাড়াও মাদকদ্রব্য পাচারের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন ১৩ জন। এঁরা ১০ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত। এ ছাড়া ইয়াবা সম্পর্কিত অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন আরও দুজন বাংলাদেশি। এঁদের সাজার মেয়াদ পাঁচ বছর করে।

সাজাপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামিরা যৌন হয়রানি, চেক জালিয়াতি, চুরি-ছিনতাই, ভিসা জালিয়াতি, নেশা জাতীয় ওষুধ, হত্যাসহ অন্যান্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন। এর মধ্যে নেশা জাতীয় ওষুধ বহন বা সেবন কিংবা পাচার সম্পর্কিত অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ১২ জন। তারা ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী সাজা ভোগ করছেন। ভিসা জালিয়াতির অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আসামির সংখ্যা চারজন। তারা ১ থেকে ৩ বছর মেয়াদী সাজা ভোগ করছেন।

চুরি-ছিনতাই অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন ২৫ জন বাংলাদেশি। তারা ১ থেকে ৫ বছর মেয়াদে সাজা ভোগ করছেন। চেক জালিয়াতির অপরাধে পাঁচজন বাংলাদেশির সাজার মেয়াদ ১ থেকে ৩ বছর। আর যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে সাজা ভোগ করছেন নয়জন বাংলাদেশি। তারা ১ থেকে ৩ বছর মেয়াদী সাজা ভোগ করছেন। আর হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশির সংখ্যা মোট ছয়জন।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মদ গাঁজা সেবন ও চুরি-ছিনতাইয়ের অপরাধে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি বর্তমানে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। প্রবাসী বাংলাদেশি বিশিষ্টজনেরা এটিকে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য লজ্জাজনক বলছেন। তবে সাধারণ বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে এসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে কোনো কার্যক্রম নেই কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশি কমিউনিটির সামাজিক সংগঠনগুলোর।

সদ্যবিদায়ী শ্রম কাউন্সেলর ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দূতাবাস বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকায় এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে কমিউনিটির পক্ষ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলে দূতাবাস তাতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ ফোরাম কাতারের প্রেসিডেন্ট ইফতেখার আহমদ বলেন, ‘এমন বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশ ফোরাম কাতারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আমরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।’

তবে ইফতেখার আহমদ মনে করেন, এ ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে কাতারে আসার পর অল্প বেতন দেখে অনেকে হতাশ হয়ে বাড়তি আয়ের লোভে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তাই কাতারে আসার পথে মোটা অঙ্কের টাকায় ভিসা বিক্রি বন্ধ করা গেলে কাতারে আসার পর অপরাধ প্রবণতা অনেক কমে আসবে।

আইইবি কাতার শাখার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশি কমিউনিটির সংগঠনগুলো তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে পারবে। কারণ, এ ধরনের সংগঠনগুলো কেবল দোহা বা এর আশপাশে সীমাবদ্ধ। তাই এ ব্যাপারে দূতাবাসকেই এগিয়ে আসতে হবে। দূতাবাস এ সম্পর্কে সচেতনতা সভা আয়োজন ও দূতাবাসে আসা কর্মীদের কাছে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করতে পারে।’

তবে ২০১৮ সালে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলথানি বিভিন্ন উপলক্ষে ২৯ জন সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আসামিকে ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন।

Bootstrap Image Preview