Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

আলু চাষে লোকসান, কোল্ড স্টোরেজ না থাকায় বিপাকে কৃষক

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট:
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৩০ AM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবি বিডিমর্নিং


লালমনিরহাটে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর চর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকরা প্রতিবছর আলু চাষ করে লাভবান হলেও এবার রবি মৌসুমে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে। বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় আলু চাষ করে পড়েছে বিপাকে।

গত ২ বছর ধরে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অনেকেই এ বছর আলু চাষ করেনি। আবার অনেকেই লোকসান পুষিয়ে নিতে আলু তুলেই ভুট্টা চাষ শুরু করেছে। গত বছর জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪ শত ২০ হেক্টর জমি। আর এবার আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ১ শত ৩০ মেট্রিন টন। এ ছাড়া জেলার সদর উপজেলা ছাড়া বাকি ৪ উপজেলায় কোল্ড স্টোরেজ না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে আলু চাষীদের।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাটে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয় বরাবরেই। তাই কৃষকরা অন্য ফসলের চেয়ে আলু চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু গত ২-৩ বছর ধরে অসময়ে বৃষ্টিপাতের সাথে পোকার আক্রমণের কারণে আলুর ফলন কম হয়। আবার ক্ষেতে জ্বলা, কারেন্ট, দাউদসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। তাতে কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হয় না। পাশাপাশি বাজারে আলুর ভালো দামও পাচ্ছে না কৃষকেরা।

জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক মহাসিন আলী জানান, প্রতি বছরে তিনি কমপক্ষে ৪-৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতেন। জমি থেকে আলু উত্তোলনের পর সেগুলো বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে রাখতেন। কিন্তু গত বছর আলুর দাম না থাকায় কোল্ড স্টোরেজ থেকে তিনি আলু উত্তোলন করেননি। সব মিলিয়ে তার আলু চাষে ৬৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর তিনি আলু চাষ না করে ভুট্টা চাষ করেছেন।

ওই এলাকার অপর আলু চাষি জমসের মোল্লা জানান, আলু চাষ করলেও বাজারে দাম না থাকায় লোকসান হয়েছে তার। তাই আলু তুলেই ওই জমিতে ভুট্টা চাষ করে আলুর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

আলু চাষে প্রচুর ব্যয়, আবার উৎপাদন অনুযায়ী আলুর দাম না থাকা, আলুতে নানা ধরনের রোগের কারণে কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। তা ছাড়া আলু চাষের কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি থাকায় বিপদে পড়তে হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় কাছাকাছি কোল্ড স্টোরেজ না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, আলু যখন তোলা হয়, তখন দাম তুলনামুলক একটু কম থাকে। তাই আলু রাখার জন্য কোল্ড স্টোরেজ প্রয়োজন। কিন্তু এ জেলায় সদর উপজেলা ছাড়া বাকি ৪ উপজেলায় কোল্ড স্টোরেজ না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে আলু চাষীদের।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ রায় জানান, আমরা কৃষদের আলু চাষের লোকসান পোষানোর জন্য ভুট্টাসহ অন্য কিছু আবাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। গতবারের কোল্ড স্টোরেজে রাখা আলু গুলো এখন আর খাওয়ার উপযোগী নেই। কারণ বাজারে নতুন আলু চলে এসেছে। সে কারণে এবার অনেক কৃষক আলু চাষ না করে ভুট্টাসহ অন্যান্য আবাদে ঝুঁকে পড়েছে।

Bootstrap Image Preview