Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জুম্মার নামাজের আগে ও পরের বিশেষ আমল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৫৯ AM
আপডেট: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৫৯ AM

bdmorning Image Preview


আজ পবিত্র জুম্মা মোবারক। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর জন্য স্পেশাল ইবাদতের জন্য পবিত্র জুম্মার দিনকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ দিনের অনেক মর্যাদা ও ফজিলত রয়েছে। পবিত্র জুম্মার দিনে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল। আর এ দিনের সেরা আমল হলো সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা। এছাড়াও ইমামের খুতবা শোনা এবং আসর থেকে মগরিব পর্যন্ত আল্লাহর জিকির ও প্রিয়নবীর দরুদে অতিবাহিত করা।

পবিত্র কোরআন-হাদিস থেকে জানা যায় জুম্মার দিনের বিশেষ সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা। তা হোক জুম্মার আগে অথবা পরে। যারা এ দিনের সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে কেয়ামতের দিন তা পাঠকারীর জন্য আকাশ তুল্য নূর হবে। 

এ বিষয় হাদিসে বলা হয়েছে- হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) রাসূল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুম্মার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুম্মা থেকে অপর জুম্মা পর্যন্ত নূর হবে।

হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুম্মার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবেও সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুম্মার থেকে অপর জুম্মা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গুনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য যে, কবিরা গুনাহ তওবাহ করা ছাড়া মাফ হয় না।’

জুম্মার দিন বেশি বেশি দরূদ পড়া: হজরত আওস ইবনে আওস (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সকল দিন অপেক্ষা জুম্মার দিনটিই হলো শ্রেষ্ঠ। এতে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তার মৃত্যু হয়েছে। এবং এতেই বিশ্ব ধ্বংসের জন্য শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এ দিনের পুনর্জীবিত করার জন্য দ্বিতীয়বার ফুঁক দেয়া হবে। এ দিন তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর।

তোমাদের দরূদ নিশ্চয় আমার নিকট উপস্থিত করা হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল আমাদের দরূদ আপনার নিকট কেমন করে উপস্থিত করা হবে অথচ আপনি তখন মাটি হয়ে যাবেন?

রাসূলুল্লাহ (সা.) উত্তরে বললেন, ‌আল্লাহ তায়ালা নবিদের শরীর জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, বাইহাকি)

যে ব্যক্তি জুম্মার দিন আসরের নামাজের পর ৮০ বার এ দরুদ পড়বে, তার ৮০ বছরের গোনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে।

জুম্মার দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর (দুনিয়ায়) মানুষ এবং জিন ব্যতিত প্রত্যেক প্রাণীই কেয়ামতের ভয়ে আতংকিত থাকে। জুম্মার দিনে এমন একটি বরকতময় সময় আছে, যাতে মুসলিম বান্দা নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন।

কা’ব বিন মালিক এ হাদিসের বর্ণনাকারী হজরত আবু হুরায়রা (রা.) কে জিজ্ঞেস করলেন, এটি কি প্রত্যেক বছরে হয়ে থাকে?

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, বরং তা (এ সময়টি) প্রত্যেক জুম্মাতেই রয়েছে। অতঃপর কা’ব বিন মালিক তাওরাত (কিতাব) খুলে পাঠ করলেন এবং বললেন, আল্লাহর রাসূল সত্য বলেছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন যে, অতঃপর আমি (তাওরাত কিতাবের পারদর্শী) হজরত আব্দুল্লাহ বিন সালামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। এবং তাকে কা’ব বিন মালিকের সঙ্গে আমার বৈঠকের কথা জানাই। তখন তিনি (হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম) বললেন, আমি সেই সময়টি সম্পর্কেও অবগত আছি।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) তার কাছ থেকে সেই সময়টি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন- ‘এটি (দোয়া কবুলের সেই সময়টি) হচ্ছে জুম্মার দিনের শেষ মুহূর্ত।’

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এটি কী করে সম্ভব? রাসূলুল্লাহ (সা.) তো বলেছেন, ‘মুসলিম বান্দা তখন নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।’ আর (জুম্মার) দিনের শেষ মুহূর্তের সময়টিতে নামাজ পড়া বৈধ নয় (আসর নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ)। সুতরাং উহা তো নামাজের সময় নয়।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম তখন বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) কী বলেন নি যে ব্যক্তি কোনো মজলিসে বসে নামাজের অপেক্ষায় থাকে সে ব্যক্তি নামাজ পড়া (নামাজের ওয়াক্ত হওয়া) পর্যন্ত নামাজেই মশগুল থাকে?

মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সব কাজ পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক সম্পন্ন করে ইবাদত-বন্দেগিতে পরিণত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Bootstrap Image Preview