Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় ইমতিয়াজ বুলবুল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১২ PM
আপডেট: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

আজ বুধবার(২৩ জানুয়ারি) বিকেলে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি)ইমতিয়াজ বুলবুলের দ্বিতীয় নামাযে জানাজা সম্পন্ন হয়। সেখানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

বিএফডিসিতে বুলবুলের দ্বিতীয় জানাজায় উপস্থিত হন- অভিনেতা আলমগীর, রিয়াজ, জায়েদ খান, সঙ্গীতশিল্পী রবি চৌধুরী, মনির খান, শফিক তুহিন, এন্ড্রু কিশোর, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন প্রমুখ।

এর আগে বুধবার বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার প্রথম নামাযে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ নি‌য়ে আসা হয়। বুলবু‌লের প‌রিবারের চাওয়া অনুযা‌য়ী বাজা‌নো হয় আহ‌মেদ ই‌মতিয়াজ বুলবুলের ‘সবক’টা জানালা খু‌লে দাও না’ গান‌টি। এরপর তা‌কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এরপর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ শহীদ মিনারের বেদিতে রাখা হয়। ফুল দি‌য়ে শ্রদ্ধা জানান সঙ্গীত, চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে।

সেখানে উপস্থিত রয়েছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছেলে আসিফ ইমতিয়াজ মুন এবং দুই মেয়ে রোকসানা তানজিম মুকুল ও রোয়েনা হাসান মিতুল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, কণ্ঠশিল্পী মনির খান, শফিক তুহিনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও মুক্তিযোদ্ধারা।

একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বুলবুলের দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এর আগে মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে রাজধানীর আফতাব নগরে নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।

তার গানে প্রেম, বিরহ, কটাক্ষ, অনুরাগ, দেশপ্রেম, শিশুর সারল্য, সামাজিক নাটকীয়তা, বিদ্রোহ, চাহিবামাত্রই পাওয়া যেতো। তাই ছবির গানের ফরমায়েশি জগতে তার কদর ছিলো আলাদা। তার সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিলো নিজেই গান লিখতেন। তাই সুর আরও সুন্দর করে বসে যেতো। মনে হতো এ গানের সুর ও কথা একসঙ্গেই যমজ হয়ে জন্ম নিয়েছে!

তার লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান হলো- ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেল লাইনের ধারে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’, ‘ও আমার আট কোটি ফুল দেখ গো মালি’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’, ‘একতারা লাগে না আমার দোতারাও লাগে না’, ‘আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘আমি তোমারি প্রেমও ভিখারি’, ‘ও আমার মন কান্দে’ এবং ‘ও আমার প্রাণ কান্দে’।

এছাড়া সিনেমার গানের মধ্যে- ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘কী আমার পরিচয়’, ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘তোমার আমার প্রেম এক জনমের নয়’, ‘তুমি হাজার ফুলের মাঝে একটি গোলাপ’, ‘জীবনে বসন্ত এসেছে ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন’, ‘ঘুমিয়ে থাকো গো স্বজনী’, ‘আমার হৃদয় একটা আয়না’, ‘ফুল নেব না অশ্রু নেব’, ‘বিধি তুমি বলে দাও আমি কার’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা হৃদয়ে সুখের দোলা’, ‘তুমি আমার এমনই একজন’ এবং ‘যারে এক জনমে ভালবেসে ভরবে না এ মন', 'তুমি সুতোয় বেঁধেছ শাপলার ফুল নাকি তোমার মন’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

Bootstrap Image Preview