আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ব জনসংখ্যার (২৫৭ মিলিয়ন) ৩.৪% জনগণ কাজের জন্য নিজ দেশে ছেড়ে অন্য দেশে বাস করছে। আর এই প্রবাসীরাই প্রতিনিয়ত নীরবে নিজ নিজ দেশের জাতীয় আয়ে রেমিট্যান্স যুক্ত করে আসছে।
এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের একটি বড় অংশ জুড়ে আছে নারী শ্রমিকরা। যাদের একটি বৃহত্তর অংশ পরিবারের অভাব মোচনের স্বপ্ন বুকে নিয়ে পারি জমাচ্ছে মধ্যপ্রাচেরের দেশগুলোতে। শুধু যে পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে হচ্ছে তা নয়। পুরুষ প্রবাসী শ্রমিকদের পাশাপাশি অবদান রাখছেন দেশের রেমিট্যান্স।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ এ শুধু মাত্র বাংলাদেশ থেকে ৭ লাখ ৩৪ হাজার কর্মী কাজের উদ্দেশ্য বিদেশ গিয়েছেন। আর এদের মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ৬০৯ জন নারী কর্মী।
স্বপ্ন নিয়ে ভিনদেশে পারি দেওয়ার পরে বাংলাদেশের নারীদের প্রবাস জীবনে প্রতিনিয়তই সম্মুখীন হতে হচ্ছে নির্যাতনের। যার ফলে প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচের দেশগুলো থেকে নারী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হয়ে খালি হাতে বাংলাদেশে ফিরে আসতে ব্যাধ হচ্ছে।
অভিবাসন সমস্যা নিয়ে দেশের দৈনিক পত্রিকাতে প্রকাশিত সংবাদগুলোর তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ রাত পর্যন্ত সফর জেল হতে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে ৪৪৫ জনেরও বেশি নারী রেমিট্যান্স যোদ্ধা। গড় পরিসংখ্যা দাঁড়াচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ২১ জন।
চলতি সপ্তাহে দেশে ফিরে আসা কোহিনুর বেগম (ছদ্মনাম) এক নিঃশ্বাসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বউ মারে, বেটি মারে, স্বামীও মারে। তার পরে আবার খাবার দেয় না, পানি দেয় না।
তিনি আরো বলেন, নয় মাস কাজ করছি। সাত মাসের বেতন দেয়নি। হাতের কানের জিনিস বিক্রি করে গিয়ে ছিলাম সন্তানের মুখে খাবার দেওয়ার জন্য কিন্ত এখন সব শেষ। দেশে আসার আগে ৬মাস জেলে(সফর জেল) ছিলাম। খালি হাতে দেশে আসছি। বাড়ি যাওয়ার টাকা টাও নাই আমার কাছে।
অপর আরেক জন বগুড়ার ৬৫ বছর বয়সী জাকিয়া বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘বাবা, যামু কোথায়? কফিল (নিয়োগকর্তা) মারে, পুলিশের কাছে গেলে টাকাপয়সা নিয়া চড়-থাপ্পড় দিয়া বিদায় দেয়। শেল্টার হোমেও দাম নাই আমগোর। বাংলাদেশের নারী ও পুরুষ কর্মীরাদের সৌদি আরবে খুবই খারাপ অবস্থায়।