Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবৈধ ইজারাঃ সাবেক প্রশাসকসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫২ PM
আপডেট: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫২ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর ওয়ারীতে বলদা গার্ডেনের পাশে সরকারি রাস্তা ব্যক্তি মালিকানায় দোকান তৈরির জন্য অবৈধভাবে ইজারা দেয়ার অপরাধে মামলা দায়ের করেছে দুদক। এতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রথম ও সাবেক প্রশাসক মো: খলিলুর রহমানসহ ডিএসসিসির সাবেক ও বর্তমান ৫ কর্মকর্তা এবং রাস্তার জমিতে দোকান বরাদ্দ প্রাপ্ত ৪৩ জন আসামি রয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন, দুদকের উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত বাদী হয়ে ডিএমপি শাহবাগ থানায় ৪৮ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ২৯।

মামলায় বলা হয়, ২০১১ সালে ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সারের ১৭ জুন পর্যন্ত ডিএসসিসি এবং ঢাকা জেলার ওয়ারী মৌজাস্থ রাস্তা, ঢাকা সিটি জরিপ খতিয়ান নং-১৩, দাগ নং-১০৭২১ এর জমিটি নিয়ে জালিয়াতি করেছেন আসামিরা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যা তথ্য প্রদানপূর্বক নিজেদেরকে অন্যায় লাভে লাভবান করার উদ্দেশ্যে কিংবা অন্যদেরকে অন্যায়ভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে ডিএসসিসির ১৯৮০ বর্গফুট রাস্তা (আবেদনকারীগণ প্রত্যেকে ৪৫ বর্গফুট) বরাদ্দ গ্রহণ এবং প্রদানের সাথে জড়িত। দুদকের অনুসন্ধানে এই বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। যার ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন, জমি বরাদ্দ প্রাপ্ত (১) মোঃ তাসাব্বির হোসেন, (২) মো: শহিদুল হাসান (সাগর), (৩) মো: গিয়াস উদ্দিন, (৪) সারোয়ার হাসান (আলো), (৫) এ. এস. এম. এ কাদের, (৬) ফাহমিদা আক্তার কুমকুম, (৭) সুরাইয়া আক্তার, (৮) ফারিয়া আক্তার নিশা, (৯) মোঃ ফরহাদ হোসেন, (১০) মোঃ নজরুল ইসলাম (বিপ্লব), (১১) মফিজুর রহমান পাবেল, (১২) ফারুক হোসেন, (১৩) মানিক মানবিক, টিকাটুলী, (১৪) মো: আব্দুল আজিজ, (১৫) প্রানতোষ চন্দ্র সরকার, (১৬) মোহাম্মদ হাবিবুল হক, (১৭) মো: এহেসান উদ্দিন সাহিন, (১৮) মো: হাফিজ উদ্দিন (পাবেল), (১৯) মো: আমিনুল ইসলাম, (২০) রফিকুল বারী চৌধুরী, (২১) মো: এনামুল হক, (২২) আ: হাদি, (২৩) হাজী আবুল হোসেন, (২৪) ইকবাল হাওলাদার, (২৫) মো: মনিরুজ্জামান, (২৬) আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী, (২৭) রশিদুল হক ভুইয়া, (২৮) আকলিমা মালেক নিপা, (২৯) ইলিয়াস হোসেন, (৩০) নজরুল ইসলাম, (৩১) নার্গিস ইসলাম, (৩২) মো: শফিকুল ইসলাম, (৩৩) আবিদ রশিদ, (৩৪) এম, আনোয়ার পারভেজ, (৩৫) হাজী মো: আরমান, (৩৬) জামিল আহ্মেদ চিশতী, (৩৭) সালেহ মোহাম্মদ কবির, (৩৮) বাতেনুর হক বাঁধন, (৩৯) মো: রানা, (৪০) সুনিল চন্দ্র পাল, (৪১) মোকলেসুর রহমান, (৪২) নুরজাহান বেগম, (৪৩) এহসানুল আলম। এছাড়া ডিএসসিসির সার্ভেয়ার (৪৪) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত), (৪৫) সার্ভেয়ার মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, (সাময়িক বরখাস্ত), (৪৬) কানুনগো মোহাম্মদ আলী (সাময়িক বরখাস্ত), (৪৭) ডিএসসিসির সাবেক সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ দিদারুল আলম।

দুদকের অনুসন্ধানকালে জানা যায়, ১ হতে ৪৩নং ক্রমিকে বর্ণিত আসামিরা এবং মৃত আব্দুর রশিদ ডিএসসিসির তৎকালীন প্রশাসক মো. খলিলুর রহমানের বরাবর টিকাটুলি বলদা গার্ডেনের পশ্চিম পার্শ্বের সীমানা সংলগ্ন সরকারি জায়গা দীর্ঘদিন খালি, পরিত্যক্ত ও নোংড়া অবস্থায় বিদ্যমান আছে বলে মিথ্যে তথ্য পরিবেশন করেন। শুধু তাই নয় তারা কিছু অংশ আগাছা ও বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ রয়েছে মর্মে অবহিত করে নিজ খরচে দোকান নির্মাণের অনুমতি প্রদানের জন্য আবেদন করেন।

প্রকৃতপক্ষে উক্ত জায়গাটি জরিপে ডিএসসিসির নামে রাস্তা হিসেবে রেকর্ডীয় ভূমি। যা কোন ক্রমেই লীজ প্রদানযোগ্য নয়। আসামিরা প্রস্তাবিত জমির শ্রেণী রাস্তা হিসেবে উল্লেখ করলে বরাদ্দ প্রদান করা যাবে না বিধায় প্রস্তাবিত জমির শ্রেণী, দাগ, খতিয়ান এবং মৌজা কিছুই উল্লেখ না করে শুধুমাত্র জায়গার অবস্থান বর্ণনা করে জায়গাটিতে আগাছা ও বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ এবং অবৈধভাবে গাড়ীর গ্যারেজ নির্মাণ করে ব্যবসা করা হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করে জায়গাটির বরাদ্দ প্রার্থনা করেন।

সার্ভেয়ারদ্বয় তাদের প্রতিবেদনে আবেদনকারীদের প্রদত্ত তথ্য উল্লেখ করে বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করে নথি কানুনগো মোহাম্মদ আলীর নিকট উপস্থাপন করেন। কানুনগো মোহাম্মদ আলী আবেদন মোতাবেক বরাদ্দ প্রদানের পক্ষে প্রস্তাব করে নথি সম্পত্তি কর্মকর্তা বরাবর উপস্থাপন করেন। কানুনগো নিজেও জমির দাগ, খতিয়ান, মৌজা এবং প্রকৃতি জানতে চাননি কিংবা নোটে উল্লেখ করেননি।

সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ দিদারুল আলম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ বিলাল হোসেন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সুলতান উল ইসলাম চৌধুরী একমত পোষণপূর্বক স্বাক্ষর করে নথি প্রশাসকের নিকট উপস্থাপন করেন। আসামিরা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বরাদ্দ প্রদানের অযোগ্য রাস্তাকে ৪৪ জন আবেদনকারীর অনুকূলে বিধি বর্হিভূতভাবে বরাদ্দ প্রদান ও দখল বুঝিয়ে দিয়ে জনস্বার্থের ক্ষতি সাধন করেছেন।

Bootstrap Image Preview