Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টাকার অভাবে মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা বন্ধ

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১৮ PM
আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১৮ PM

bdmorning Image Preview


টাকার অভাবে মুক্তিযুদ্ধের খেতাব প্রাপ্ত বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর প্রতীক হাবিলদার আব্দুল মালেকের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। তার চিকিৎসার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু তার পরিবারের সামর্থ্য নেই। এ কারণে অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, ৬ বছর আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তিনি পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তার বাম হাত ও পা অবশ হয়ে গেছে। ডায়াবেটিকস, হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি ও শ্রবণশক্তি হারিয়ে তিনি এখন শয্যাশায়ী। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী রণাঙ্গন কাঁপানো গ্রুপ কমান্ডার, খেতাবপ্রাপ্ত সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক (৭৭) নানা রোগের কাছে আজ একজন পরাজিত সৈনিক। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারটি আর্থিকভাবে আজ প্রায় নিঃস্ব।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদীর কুতুবপুর গ্রামের মৃত খাদেম আলী চাপরাশির ছেলে আব্দুল মালেক ১৯৬১ সালে তৎকালীন ইপিআর বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চাকরি ছেড়ে এলাকায় চলে আসেন। যুবকদের নিয়ে তিনি মুক্তিবাহিনীর একটি ইউনিট গঠন করেন এবং ট্রেনিংয়ের জন্য তাদের ভারতে নিয়ে যান। ভারতের বেগুনদিয়ার টাকী ক্যাম্পে তাদের ট্রেনিং প্রদান করা হয়।

পরবর্তীতে আব্দুল মালেককে ৫৬ জন মুক্তিবাহিনীর একটি দলের গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বভার প্রদান করা হয়। তিনি তাদের নিয়ে এলাকায় ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধের ৯ সেক্টরের অধীনস্থ আঞ্চলিক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিজাম উদ্দিন ও হেমায়েত বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মুলাদী, উজিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ৯ সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) জলিলের একনিষ্ঠ বিশ্বস্ত সহোচর। তার সহযোদ্ধা ছিলেন গৌরনদী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট সেন্টু, ডেপুটি কমান্ডার মনিরুল হক সোহরাব হোসেন খানসহ এলাকার অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতাযুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য তাকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি পূনরায় বিডিআর বাহিনীতে যোগদান করেন। হাবিলদার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর ১৯৮৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, ২০১২ সালে আমার স্বামী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। জমা-জমি বিক্রি করে স্বামীর চিকিৎসার খরচ চালিয়েছি। এরপর ২ বছর আগে আমার (রাবেয়া বেগমের) উভয় কিডনিতে পাথর ধরা পরে। অপারেশন করে পাথর অপসারণ করতে বহু টাকা খরচ হয়েছে। ৩ ছেলে ২ মেয়ে এখনো লেখাপড়া করছে। স্বামীর পেনশন ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকায় সংসারের খরচ চালাতে হয়। চিকিৎসার টাকা পাবো কোথায়? স্বামীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য পাওয়ার আশায় গৌরনদী মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন স্থানে বহুবার আবেদন করেও কোন সহায়তা পাননি বলে জানান রাবেয়া বেগম। এ কারণে নিরুপায় হয়ে তিনি অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Bootstrap Image Preview