শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে, মানসম্মত শিক্ষা ও নিরাত্তা নিশ্চিত করতে, ঝড়ে পড়া রোধসহ শিক্ষার্থীদের ক্লাস বিমুখতা বন্ধে শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকলে তাদের বাসায় যাওয়া, তাদেরকে বুঝানোসহ এ রকম নানা উদ্যোগের মাধ্যমে কোমরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার প্রসার ঘটাতে শুরু করেছে।
১৯৬৮ সালে কোমরগ্রাম মোল্লাপাড়ার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মরহুম আব্দুস সালাম মোল্লা (বিএবিটি) মরহুম তোফাজ্জল হোসেন আকন্দসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর বিভিন্ন চরায় উতরায় পেরিয়ে ১৯৮৫ সালে এটি এমপিও ভুক্তকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ৪৪২ জন। তাদের মধ্য থেকে ছাত্রী ২শ' জন ও ছাত্র রয়েছে ২শ' ৪২ জন।
গত কয়েক বছর থেকেই এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পরীক্ষায় সাফল্যের সহিত উত্তির্ণ হয়ে আসতেছে। এবার জেএসসি পরীক্ষায় ৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৯ জন জিপিএ-৫সহ সকলেই সাফল্যে সাথে পাশ করে। এ বছর ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ১০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
বিদ্যালয়ে পড়তে আসা নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী রিফা তামান্না জানান, আমরা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের কাছে অনেক বেশি সহযোগীতা পেয়ে থাকি। আমাদের ক্লাসে কোন পড়া বুঝতে না পারলে তাৎক্ষণিক শিক্ষককে বললে কিংবা যে কোন সময় তারা আমাদের সেটি সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন।
একই ক্লাসের ফরজানা সাদিয়া ও মায়িশা আনজুম শৈলী জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অনেক বেশি স্নেহ করে আমাদের ক্লাস নেয়। সেইসাথে আমরা যদি একদিন ক্লাসে অনুপস্থি থাকি তাহলে তারা আমাদের খোঁজ-খবর নেন এবং বাবা মার সাথে মোবাইলে কথা বলেন। এতে করে আমাদের পড়াশোনা অনেক বেশি ভালো হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মা আফরোজা আক্তার ও শেফালী বেগম জানান, আমরা বিদ্যালয়ে আমাদের সন্তারদের পাঠিয়ে দিয়ে অনেক বেশি নিরাপত্তায় থাকি। কারণ এখানে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষকগণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলেই তাদেরকে যত্নের সহিত রাখে। শুধু তাই নয় আমাদের সন্তানরা অনুপস্থিত থাকলে আমাদের ফোনে কথা বলেন। সেইসাথে কোন পরীক্ষায় নম্বর কম পেলে আমাদের ডেকে পাঠান। আর তাতে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা আরো অনেক বেশি হয়।
প্রতিষ্ঠানের আইসিটি বিভাগের সিনিয়ির শিক্ষক মাহমুদ আলম জানান, আমরা বর্তমানে সরকারের নির্দেশে প্রতিটি ক্লাসেই ইতিমধ্যেই মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছি। সেইসাথে প্রতিদিনই ক্লাস শেষে এমএমসি রিপোট আমরা পাঠিয়ে থাকি। এতে করে শিক্ষার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হক মাছুম জানান, 'শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের স্বপ্ন শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটানোর এই পরিকল্পনাকে কাজে লাগাতেই আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে এ রকম নানা উদ্যোগ হাতি নিয়েছি।
তিনি বলেন, কোন শিক্ষার্থী যদি ক্লাসে না আসে আমি নিজেই তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলি এবং না আসার কারন জানার চেষ্টা করি। সেই সাথে বাল্য বিবাহ ও মাদকদের উপর বিভিন্ন সেমিনার করা হয়। এতে করে শিক্ষার্থীর ঝরে পরার হার অনেকটায় কমে এসেছে এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বতর্মান বম্বু ইউপি'র চেয়ারম্যান মোল্লা শামছুল আলম জানান, আমাদের এই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগণদের নিয়ে প্রতি মাসে তাদের প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার বিষয়ে খোঁজ-খবরসহ বছরে দুইবার অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে তাদের সন্তানদের পড়াশোনার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে সার্বিক খোজ নেওয়া হয়।