ব্যাংকের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও লাগামহীনভাবে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। নানা অনিয়ম করে বিতরণ করা ঋণ আদায় করতে এখন হিমশিম খাচ্ছে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। যা এ খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত খেলাপি ঋণের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি প্রান্তিকেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। তিন মাসে ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা বেড়ে মার্চ প্রান্তিক শেষে হয় ৫ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। জুন প্রান্তিকে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকায়। সেপ্টেম্বর শেষে তা উঠেছে ৭ হাজার ৪৯০ কোটি টাকায়, যা এ খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। তিন মাস আগে জুনে এ হার ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর গত বছরের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। তারা একদিকে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে অন্যদিকে ঋণ বিতরণে কোনো যাচাই-বাছাই করছে না। ফলে ত্রুটিপূর্ণ ঋণ আর ফেরত আসছে না। যার কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে।’
গেল বছর তিন প্রান্তিকে অর্থাৎ ৯ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা বা প্রায় ৬৬ শতাংশ। এর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৫২০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে গত অক্টোবরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনায় গড়ে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয়। গত ৪২ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের গড় সুদহার বাড়ছে।