Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে যত ‘কুসংস্কার’!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৫৪ AM
আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৫৪ AM

bdmorning Image Preview


এই শতকের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চন্দ্রগ্রহণ ঘটতে যাচ্ছে আজ রাতে। আর এই মুহূর্তে সব থেকে আলোচ্য বিষয় আজ রাতের চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণগ্রাস এই চন্দ্রগ্রহণ শতাব্দীর দীর্ঘতম। শুধু গ্রহণই নয়, সঙ্গে চাঁদের রূপ বদলও হবে এই গ্রহণের ফলে। দেখা যাবে এই ব্লাড মুন।

আর এ চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে জড়িয়ে আছে নানান কুসংস্কার। যেসব কুসংস্কারের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। চন্দ্রগ্রহণ ঘিরে এমনই কিছু বিষয় নিচে উল্লেখ করা হল-

১। অনেকের ধারনা এই চন্দ্রগ্রহণ দেখলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানের কি ক্ষতি হয় আসলে একেবারেই তা হয় না। জ্যোতিষ মতে, এমন ধারণা একেবারেই ভুল। গ্রহণের সময়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তার বা সন্তানের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনাই নেই এর থেকে।

২।গ্রহণের সময়ে খাওয়া পা পান করায় বৈজ্ঞানিক ভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যোগ নেই ধর্মের সঙ্গেও। শুধুই কুসংস্কারের বশে আজকের যুগেও অনেকে গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া বা জল পানও করেন না। এমনকী, বাড়তি খাবার থাকলে তা ফেলেও দেন অনেকে।

৩। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে নাকি অনেক পশুদের ব্যবহারে পরিবর্তন দেখা যায়! চন্দ্রগ্রহণের সময় পশু-পাখিরা অযথা ডাকাডাকি করে, ডানা ঝাপটায়। এর কারণ, অসময়ে অন্ধকার হয়ে যাওয়া। ২০১০ সালেই এমন তথ্যই প্রকাশ করা হয় পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের তরফ থেকে।

৪। চন্দ্র গ্রহন মানুষের মনে প্রভাব ফেলে নাসা এমন তথ্য মানতে একেবারেই রাজি নয়। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কোনো ব্যক্তির মানসিক সমস্যা হলে তা একেবারেই তার মনের ব্যাপার। ছোট থেকে শুনে আসা ভয়গুলিই কাজ করে। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেই জানাচ্ছে নাসা।

৫। চন্দ্রগ্রহণের সমেয় মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে করতে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছিল। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, করোনারি, ইউরিনারি, হেমারেজের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু, শারীরিক এই সমস্যাগুলি যে চন্দ্রগ্রহণের জন্যই হয়েছিল তা প্রমাণ সাপেক্ষ।

বিরল না হলেও এমন দৃশ্য দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হয় অনেক বছর। মহাকাশ গবেষক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ববাসী দীর্ঘস্থায়ী চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১১টা ১৩ মিনিট শুরু হয়ে এই গ্রহণকাল ১০৩ মিনিট। ১৮ বছর পর দীর্ঘস্থায়ী এই চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে বাংলাদেশেও আগ্রহের কমতি নেই। আলো-আঁধারের এই দৃশ্য দেখতে আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। ঢাকার বিজ্ঞান জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের সামনে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখার আয়োজন করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এই গ্রহণের সময় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলো-আঁধারিতে ঢাকা থাকবে চাঁদ। এ সময় পৃথিবী থেকে চাঁদকে দেখাবে গাঢ় কমলা বা লাল রঙের। যাকে বলা হচ্ছে ব্লাড মুন।

চন্দ্রগ্রহণের সময় যখন সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে পৃথিবী একই সরলরেখায় চলে আসে, তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। ফলে পৃথিবী থেকে মনে হয় চাঁদ ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছে। এবারের চন্দ্রগ্রহণের সময় কক্ষপথে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব সব থেকে বেশি হবে (অপসূর অবস্থান)। ফলে পৃথিবীর ছায়াটিও দীর্ঘপথ জুড়ে থাকবে। সেই দীর্ঘতম ছায়াপথটিকে অতিক্রম করতে চাঁদের বেশি সময় লাগবে। তাই ২৭ জুলাইয়ের চন্দ্রগ্রহণ বেশ সময় ধরে চলবে।

সূর্যগ্রহণ খালিচোখে দেখা অত্যন্ত ক্ষতিকর হলেও চন্দ্রগ্রহণ খালিচোখে দেখা ক্ষতিকর নয়। চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ আবশ্যক নয়, তবে পরিষ্কার তথা ভালোভাবে দেখতে সেগুলোর ব্যবহার করা যেতে পারে। 

Bootstrap Image Preview