Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঝিনাইদহে নিয়ম নীতি ছাড়াই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ বেকারী কারখানা

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩১ AM
আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩১ AM

bdmorning Image Preview


ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে যত্রতত্র নিয়ম নীতি ছাড়া গড়ে উঠেছে বেকারী কারখানা। উপজেলাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ২ ডজন বেকারী কারখানা। অধিকাংশ বেকারীগুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রণয়ন, গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণ কোনো ব্যবস্থা নেই। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ-টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদনসহ নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কিংবা বাড়িতে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক বেকারী কারখানা। কারখানাগুলো নিয়ম নীতি না মেনে স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরি করছে বেকারী খাবার। অভিযোগ রয়েছে বেকারী খাবার তৈরি করতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিক্যাল ও নিন্মমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরি করছেন।

নোংরা ও অপরিস্কার কড়াইগুলোতে আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরি করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভনভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ন তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী ফাস্টফুড খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। অধিকাংশ বেকারি মালিকের বিরুদ্ধে বিকল্প বেকারী মোড়কে নিন্মমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পণ্য বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকে ঝুলছে পাউরুটি, ক্রীমরোল, কেক, পেটিস, সিঙ্গাড়াসহ অন্যান্য বেকারী খাবার। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোনো উল্লেখ নেই। শহরের চাকলাপাড়া, আরাপপুর, হামদহ, পাগলাকানায়সহ শহরের বেশ কিছু এলাকায় এমন তথ্য উঠে আসে। এ সকল বেকারীতে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ জরিমানা আদায় করা হলেও, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছুদিন যেতে না যেতেই ফিরে যাচ্ছে পূর্বে অবস্থায়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ।

কয়েকজন বেকারী শ্রমিক জানান, দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের ঝামেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করা হয়।

তারা আরও বলেন, মাঝে মধ্যে স্যানিটারি কর্মকর্তা এসে ঘুরে চলে যায়। উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না। বিশেষ করে নিমতলা ও নতুন বাজার এলাকায় দু'টি বেকারিতে দেখা যায় খুবই নিম্নমানের ফুড প্রোডাক্ট তৈরি করা হচ্ছে। এরা নিম্নমানের এসব তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে পাইকারি হিসাবে দিয়ে থাকে।

ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও গ্রাম এলাকায় এখন বেকারী কারখানা তৈরি করা হয়েছে যত্রতত্রভাবে। কিন্তু এত নিম্নমানের খাবার তৈরি করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরে নিচ্ছেনা বলেও জানান তারা।
 

Bootstrap Image Preview