Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কুল ও পেয়ারা চাষে ভাগ্য বদলাতে চান ঝিকরগাছার সিরাজুম মনির

শহিদুল ইসলাম, বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:১৮ PM
আপডেট: ২০ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:১৮ PM

bdmorning Image Preview


যশোরের ঝিরগাছা ও শার্শা উপজেলায় চলতি মৌসুমে কুল এবং পেয়ারা চাষে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বিগত বছরে এই দুই উপজেলায় লক্ষ মাত্রার চেয়ে ৫৫ হেক্টর বেশি জমিতে পেয়ারা এবং কুল চাষ হয়েছে। দিনে দিনে কুল এবং পেয়ারা চাষের প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়ছে বলে উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়।

মিষ্টি সুস্বাদু ও লাভ জনক হওয়ায় এ চাষের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মৌসুমি চাষিরা।

কুল এবং পেয়ারা চাষের তথ্য অনুসন্ধানে তেমনি ভাবে পরিচয় মেলে ঝিকরগাছা উপজেলার সৎ, নির্ভীক ও কঠোর পরিশ্রমি, সফল ব্যবসায়ী এবং একজন সফল চাষী সিরাজুম মনিরের সাথে। জীবনের কঠিন কষাঘাতে লেখাপড়ার দৌরাত্ম্য বেশি দূরে না গড়ালেও সংসারের হাল ধরতেই যৌবনের প্রতিটি মুহুর্তে তিনি পার করেছেন কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে। সিরাজুম মনির পেশায় একজন মুদি ব্যবসায়ী।

ব্যবসার পাশাপাশি তার উচ্চাকাংখা এবং শখ তৈরী হয় ফল চাষের। সে ক্ষেত্রে প্রথম দিকে তেমন কোন সফলতা না পেলেও কোন রকম তিনি ভেঙ্গে পড়েননি বরং কঠোর ধৈর্যের সাথে তিনি ফল চাষের উপর আরো সাহস এবং শক্তি সঞ্চয় করেছেন। বিগত ২০১৭-২০১৮ সালে ৪ বিঘা জমিতে কুল এবং পেয়ারা চাষ করে চরম ভাবে লোকসানের মধ্যে পড়েন। গাছ এবং ফলন ভালো না হওয়ার কারণে তাকে এই লোকসানে পড়তে হয়।

তারপরও জীবনের মোড় ঘুরাতে মনের সাধ মেটাতে বর্তমান মৌসুমেও সিরাজুম মনির একইভাবে কুল এবং পেয়ারা চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। সিরাজুম মনিরের দুই বোন এবং তিন ভাইয়ের বিশালাকার যৌথ পরিবারের সদস্য সে। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সিরাজুম মনির সকলের ছোট। সে ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের মাওঃ রুহুল আমীনের ছেলে।

সরেজমিনে সিরাজুম মনিরের কুল ও পেয়ারার যৌথ বাগান ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি পেয়ারা ও কুল গাছগুলো প্রকৃতির আপন খেয়ালে মাথা উঁচু করে বেড়ে উঠেছে। প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে আশানুরুপ হারে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর জীবনের ঘোর অন্ধকার কেটে আশার আলো ফুটবে বলে মনে করেন ফল চাষী সিরাজুম মনির।

জানতে চাইলে সিরাজুম মনির বলেন, এবছর কুল ও পেয়ারা চাষে প্রায় ৫০ হাজার এবং বিগত বছরের গাছ এবং চিকিৎসা বাবদ ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।  দুই বিঘা জমিতে কুলের গাছ ১৭০টি এবং পেয়ারার গাছ ১ হাজার পিস লাগিয়েছি ফলন ভালো এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি বিগত বছরের লোকশান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখব।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিপংকর দাস বলেন, এ উপজেলায় চলতি বছরে কুল চাষ হয়েছে ৫০ হেক্টর জমিতে যা বিগত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি এবং পেয়ারা চাষ হয়েছে ৫০ হেক্টর জমিতে যা বিগত বছরের চেয়ে ৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে।

এদিকে যশোরের শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি বছরে শার্শায় কুল চাষ হয়েছে ৭০ হেক্টর জমিতে পাশাপাশি পেয়ারা চাষ হয়েছে ১৯০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে প্রকার ভেদে ৩৫ থেকে ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যশোরের এই দুই উপজেলার মাটির উর্বরতা শক্তি বেশি এবং আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিটি চাষের ক্ষেত্রে মানানসই। একারণে এখানে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি অধিক লাভের মুখ দেখেন এখানকার চাষীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছরই চাষী ও চাষের সংখ্যা বাড়ছে।  

Bootstrap Image Preview