মাগুরা সদর উপজেলার পলি ক্লিনিকে টিউমার আক্রান্ত এক নারীকে নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচারের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ায় গত ১৩ জানুয়ারি পলি ক্লিনিকে ভর্তি হন মাগুরা সদর উপজেলার আবালপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী তনু বেগমের (৩৮) । এ সময় রোগীর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বলা হয় এখনই অপারেশন না করলে তার মৃত্যু হতে পারে। ১৪ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৯টার দিকে ডা. মো. মুক্তাদির রহমান নিজে অপারেশন না করে ক্লিনিকের দুই সেবিকাকে অস্ত্রোপচার করতে বলেন। অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) ওই দুই নার্স অস্ত্রোপচার করতে গেলে রোগী তনু বেগম ডাক্তার কোথায় জানতে চান।
এ সময় নার্সরা ‘ডাক্তার এখনই আসবেন’ বলে জানালেও নিজেরাই অস্ত্রোপচার করেন। পরে ওই নারীর জরায়ু ও টিউমারে অতিরিক্ত চর্বি দেখে ভয় পেয়ে ডাক্তারকে ফোন করলে প্রায় ১৫ মিনিট পর ডাক্তার সেখানে যান। কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে নার্সদের বলেন ‘ঝামেলা আছে সেলাই করে দাও’।
পরে ডা. মুক্তাদির রহমান ওটি থেকে বের হয়ে রোগীর স্বামীকে বলেন, আপনাদের রোগীর অপারেশন এখানে হবে না। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। এখনই ফরিদপুর নিয়ে যেতে হবে। সেখানে আমার পরিচিত ডাক্তাররা ব্যবস্থা নেবে।
মেডিকেলে ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে বলেন, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে তাকে অপারেশন করা যাবে না। এরপর থেকে তনু বেগম সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সিজারিয়ান রোগীদের পলি ক্লিনিকে পাঠানো হয়। পরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অপারেশন করা হয়। এ ধরনের ঘটনা ডা. মুক্তাদির রহমান এর আগেও একাধিকবার পলি ক্লিনিকে ঘটিয়েছেন বলেও তারা অভিযোগ করেন।
নার্স দিয়ে অপারেশনের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত ডা. মো. মুক্তাদির রহমান বলেন, মাগুরায় এসব রোগীর অপারেশন হয় না। আমরা শুধু উপরের চামড়াটাই কেটেছিলাম। রোগীকে সেলাই করে পাঠিয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে পলি ক্লিনিকসহ ডাক্তার মুক্তাদির রহমানের শাস্তি দাবি করেছেন রোগীর স্বামী আব্দুর রাজ্জাক।
রোগীর স্বামী রাজ্জাক বলেন, ডা. মুক্তাদির রহমান আমাদের ফরিদপুরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের ফরিদপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। ডায়াবেটিস হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, আপনারা রোগীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।