ভোলার লালমোহনে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এক নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক নারী।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার চরভুতা গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, সুরমা (২৫) ও তার বোনের মেয়ে খাদিজা (৮)।
এ ঘটনায় আহত সুরমার বোন অংকুরা বেগমকে বরিশাল মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিহত সুমরা বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা গ্রামের রফিকের স্ত্রী ও খাজিদা চরভুতা গ্রামের রফিজলের মেয়ে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে অংকুরা বেগম তার ছোট মেয়ে খাদিজা ও ছোট বোন সরমা ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই সুরমা মারা যায় এবং আহত হয় ২ জন।
ঘরের লোকজনের ডাক-চিৎকার শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে এবং পরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু খাদিজা মারা যায়। বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেল ওয়ার্ড বয় আবুল কালাম খাদিজার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ দিকে হাসপাতালে আহত অংকুরার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পুড়ে গেছে।
উদ্ধারকারী একই বাড়ির যুবক রাকিব জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাদের আর্তচিৎকার শুনে ঘরে প্রবেশ করে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি।
নিহত সুরমার মেঝ বোন শাহিনুর ও ভাই মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সুরমার বাবার বাড়ি লালমোহন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পন্ডিত বাড়ি। সুরমার ৬ মাস আগে বোরহানউদ্দিনের দেউলা এলাকার রফিকের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী রফিকের সাথে বনি-বনা হচ্ছিল না। তাদের সাথে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এ নিয়ে বিচার শালিশও হয়। গত ১০ দিন আগে সুরমাকে রেখে তার স্বামী চলে যায়। তখন সুরমা তার বড় বোন আংকুরার বাড়িতে উঠে। সেখানে এ ঘটনা ঘটে।
এ দিকে আগনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় পরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
লালমোহন থানার অফির্সাস ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবীর বলেন, সুরমার স্বামীর সাথে বিরোধ চলছিল। স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ধারণা করা হচ্ছে তার স্বামী এটা ঘটাতে পারে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগ- নিহতের স্বামী রফিক এ আগুনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। সুরমার সাথে তার স্বামীর পারিবারিক কলহ ছিল বলে পরিবারের লোকজন জানায়। সে কারণেই সে ঘরে আগুন লাগিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের কয়েকটি টিম দুর্বিত্তদের ধরতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।