সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল জলিলের পাঠানো 'উপহার' ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে গোয়াইনঘাটে জৈন্তাপুরের শ্রীপুরে প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নতুন সরকারের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর গত সোমবার নিজের নির্বাচনী এলাকায় আসেন প্রতিমন্ত্রী ইমরান।
জানা গেছে, বুধবার রাতে ওসি আবদুল জলিল প্রতিমন্ত্রীকে খুশি করতে তার বাড়িতে ট্রাকভর্তি বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পাঠান। বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ট্রাকটি দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিমন্ত্রী তা ওসির কাছে ফেরত পাঠান।
প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, আমি কখনই কোন উপহার গ্রহণ করি না। তিনি (ওসি) না জেনেই এগুলো পাঠিয়েছিলেন। ফলে তা ফিরিয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ওসি আবদুল জলিলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
রাজধানী থেকে থেকে প্রকাশিত অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন, দৈনিক জনতা, মৌলভীবাজার থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পাতাকুঁড়ির দেশ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম। তিনি ওসি আবদুল জলিল কর্তৃক নির্জাতনের শিকার হন।
সাংবাদিক সাইফুল বিডিমর্নিংকে জানান, ওসি জলিল শ্রীমঙ্গল থানায় কর্মরত থাকাকালীন আমাকে তৎসময়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আটক করে থানা হাজতে নিয়ে যায়। পৌর এলাকার ক্যাথলিক মিশন রোড থেকে সাদা পোশাকে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আবদুল জলিলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সাংবাদিক সাইফুলকে আটকের পর থানায় নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়।
সাইফুল আরো জানায়, আটকের পরদিন ২৪ এপ্রিল বিকেলে গাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলা এবং পুলিশ অ্যাসল্টের ২টি মিথ্যে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সাংবাদিক সাইফুল পুলিশী নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে কারাভোগের ৩৮ দিন পর জামিনে মুক্ত হন।
সাইফুলের অভিযোগ, 'শ্রীমঙ্গল থানার ওসির বিরুদ্ধে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ' শিরোনামে ২২ এপ্রিল দৈনিক জনতা ও সাপ্তাহিক পাতাকুঁড়ির দেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ওসি আব্দুল জলিল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আটক করেন। আটকের পর ওসির নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে থানায় রেখে সারা রাত হাত-পা চোখ বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
পরে ১৩ মে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রুমি বেগম মৌলভীবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি আবদুল জলিলকে প্রধান আসামি করে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।