গত সপ্তাহে কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ। কানাডায় আমুদেই কাটছে তার সময়। সেখানে শূকরের মাংস, ওয়াইন ও সিগারেট খাচ্ছেন দেদারছে। এমন ছবি ব্যক্তিগত টুইটারে পোস্ট করেছেন রাহাফ। ছবিগুলো দেখে মনে হয়নি যে, তিনি এগুলোতে অনভ্যস্ত।
সৌদি তরুণী পরিবার থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ড যাওয়ার পর নিজ দেশে ফিরলে পরিবারের লোকদের হাতে মারা যাওয়ার ভয়ে তিনি কানাডায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন। রাহাফ কানাডায় তার নতুন জীবনে উদযাপনের কিছু ছবি পোস্ট দেন।
চলতি সপ্তাহে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা নাস্তার ছবিতে ক্যাপশন লিখেন- 'ওএমজি বেকন' ও মাই গড বেকন (শূকরের মাংস)। মুসলমানদের শরিয়তে শূকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। এই ছবির সঙ্গেই তিনি মদ ও সিগারেটের টুকরোর ছবি দিয়ে সেগুলো দারুণ উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন।
সৌদি আরবে মদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সৌদির আইনে মদপান দণ্ডনীয় অপরাধ। মদপানে ধরা পড়লে তাকে কারাগারে যেতে হয়।
এ ছাড়া রাহাফ ভোরে স্টারবাকস কফি খাওয়ার ছবিও শেয়ার করেছেন। যেখানে তাকে হাঁটু পর্যন্ত ধূসর উলের পোশাকে দেখা গেছে। পায়ের এর পরের অংশ আলগা।
রাহাফ কুকুর নিয়ে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও দিয়ে তাতে ক্যাপশন দেন- স্বাধীনতা অনুভব করছি।
তিনি তার ব্যক্তিগত টুইট অ্যাকাউন্টে শনিবার লেখেন- সৌদি আরব থেকে যারা বের হতে সহযোগিতা করেছেন তাদের ধন্যবাদ।
তিনি লেখেন, যারা আমাকে নতুন জীবন দিতে সহযোগিতা করছেন তাদের ধন্যবাদ। সত্যি বলতে আমি কখনও স্বপ্নে ভাবিনি আমি ভালোবাসা ও সহযোগিতা পাব।
সৌদি তরুণী রাহাফ গত রবিবার কানাডায় পৌঁছেন। এর আগে শনিবার পর্যন্ত তিনি থাই বিমানবন্দরের একটি হোটেলে ছিলেন। যেখান থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
তিনি কানাডার গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে বলেন, কানাডায় পৌঁছানোর সহযোগিতা নারীদের স্বাধীন করল। আমাকে দেখে আরও নারীরা অনুপ্রাণিত হবেন। আমি নারীদের স্বাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী কাজ করব।
রাহাফ বলেন, আজ ও আগামী দিনগুলোতে আমি বিশ্বজুড়ে নারীদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করব। কানাডায় আসার পর প্রথম দিন আমি যে অভিজ্ঞতা পেয়েছি, ঠিক সেভাবেই নারীদের হয়ে লড়াই করব।
সৌদি আরবে জীবনের হুমকি নিয়ে কানাডায় আশ্রয় নিয়েছেন রাহাফ। কানাডার সরকার তাকে শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে আশ্রয় দিয়েছে।
সৌদি আরবে ফেরত পাঠানোর আশঙ্কায় ব্যাংকক বিমানবন্দরে হোটেল কক্ষে নিজেকে ব্যারিকেড দিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমের নজর কাড়েন ১৮ বছর বয়সী এ তরুণী।
তার আশঙ্কা ছিল- সৌদি আরবে তাকে ফেরত পাঠালে পরিবার তাকে হত্যা করতে পারে। যদিও তার পরিবার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শরণার্থী সংস্থাগুলো তাকে কানাডায় বসবাসের জন্য সহযোগিতা করেছে। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ওই তরুণীকে আশ্রয় দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। শেষ পর্যন্ত রাহাফ কানাডাকে বেছে নেন।