সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমকে। এর আগে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি আছেন হরিয়ানা রাজ্যের এই ‘ধর্মগুরু’।
বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পাচকুলাতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ২০০২ সালে সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি খুনের ঘটনায় ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমসহ তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেন। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার রুপি জরমানাও করা হয়।
মামলার রায় ঘিরে এদিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ডেরা সাচ্চা সৌদার সদর দপ্তরের আশপাশে মোতায়েন করা হয় কমান্ডো বাহিনী।
২০০২ সালে পুরা সাচ নামে এক পত্রিকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির চিঠি ছাপা হয়। তাতে লেখা হয়, রাম রহিমের আশ্রমে সধ্বীরা নিয়মিত যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণের শিকার হন। কয়েক মাস পরে ২৪ অক্টোবর ওই পত্রিকার সম্পাদক রামচন্দ্র ছত্রপতি সিরসায় নিজের বাড়ির কাছে গুলিবিদ্ধ হন। খুব কাছে থেকে তাকে গুলি করা হয়েছিলো। তিন সপ্তাহ বাদে সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি মারা যান।
পরে সিবিআই মামলার অভিযোগপত্রে জানা যায়, ডেরার কর্তা কিষেনলাল নিজের নিবন্ধন করা রিভলবার ও একটি ওয়াকিটকি দিয়েছিলেন দুই খুনিকে। ভাড়াটে ওই দুই খুনির নাম কুলদীপ সিং ও নির্মল সিং। ওই খুনের ষড়যন্ত্রের সময় উপস্থিত ছিলেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম। কুলদীপ, নির্মল এবং কিষেনলালের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা চলছে।
খুনের অভিযোগে গত শুক্রবার পাচকুলায় বিশেষ সিবিআই আদালত গুরমিত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করেন। শুনানির সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হয়েছিলো রাম রহিমের সঙ্গে।
এ ছাড়া ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সব্যস্ত হন ৫১ বছর বয়েসি রাম রহিম। তারপরেই হরিয়ানার পাচকুলা এবং সিরসায় ব্যাপক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সেই হিংসায় নিহত হন ৪০ জন এবং আহত হন বহু মানুষ। ওই ধর্ষণ এবং হিংসার ঘটনায় ২০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা হয়েছে রাম রহিমের। এবারে সাংবাদিক খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজা হলো তার।