Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মেধাবী শিক্ষার্থী প্রতীককে আত্মহত্যায় ধাবিত করা হয়েছে: দাবি পরিবারের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫৬ AM
আপডেট: ১৬ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫৬ AM

bdmorning Image Preview
ছবি বিডিমর্নিং


শাবি প্রতিনিধি, আবদুল্লা আল মাসুদ।।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীককে আত্মহত্যায় ধাবিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

এর আগে প্রতীকের বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহীদা সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জিইবি বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার প্রতীকের মরদেহ নিতে এসে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও একই সুরে কথা বলেন।

প্রতীকের দুলাভাই রিজভী শাহরিয়ার বলেন, অনার্সে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও মাস্টার্সে থিসিসের সুপারভাইজর না পাওয়া, মাস্টার্সের ফলাফলে অনাকাঙ্খিত ধ্বসে মনে হচ্ছে প্রতীককে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনায় প্রতিকের বাবা তাওহিদুজ জামান সিলেটের কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান থানার এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া। এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঘটনায় বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই তার পরিবার থেকে প্রতীকের সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি তখন তার ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবগত করি। এর পর আমার সাথে প্রতীক বা প্রতীকের পরিবারের কেউ যোগাযোগ করেনি এবং পরবর্তীতে ফলাফল কি হয়েছিল এই ব্যাপারেও আমাকে অবগত করা হয়নি।

উপাচার্য আরো জানান, প্রতীকের মতো একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মর্মাহত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয় নিয়ে যে সব আলোচনা উঠেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একাটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি তদন্তের মাধ্যমে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দীনকে প্রধান করে এই কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো আনোয়ারুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলাম।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতীকের আত্মহত্যার জন্য শাবির জিইবি বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করেছেন তার বড় বোন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসঅরডার বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদ। অনার্সে ১ম শ্রেণীতে ১ম হওয়া হওয়া সত্ত্বেও প্রতীককে মাস্টার্সে সুপারভাইজার না দেয়া এবং বিভিন্ন কোর্সে কম নাম্বার দেয়ার অভিযোগ করেন শান্তা তাওহিদ।

এদিকে বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, অনার্সে (৩.৮২) ১ম হওয়া ঐ শিক্ষার্থী মার্স্টাসে যৌথভাবে ৭ম স্থান অধিকার করেছেন। মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.৫৮ হলেও ২য় সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.৩৩ হয়।

এ ব্যাপারে জিইবি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শামসুল হক প্রধান বলেন, সুপারভাইজার না দেয়া বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি কিছুদিন হল বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে এসেছি।

সুপারভাইজার না দেয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা কিছু ক্রাইটেরিয়া ফলো করে থাকি। ঐ সেশনে একজন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থী নিতে পারেন। যারা নিয়েছেন তাদের পর সে আর সুপারভাইজার খুঁজে পাননি। তারপর বিভাগে জানোনো হয়েছে কাউকে সুপারভাইজার করানোর জন্য বিভাগ সর্বসম্মতিক্রমে হয়তো চিন্তা করেছে কিন্তু কোনো টিচার রাজি হয়নি। ১ম শ্রেণিতে ১ম একজন শিক্ষার্থী সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সুপারভাইজরের স্বাক্ষর নিয়ে বিভাগে জমা দিতে হয়। কিন্তু সে সেটা করেনি।

অন্যদিকে প্রতীকের বন্ধু ফাহমিদ হোসেন ভূঁইয়া জানান, প্রতীক কয়েকদিন ধরে ব্যাক্তিগত কিছু সমস্যা নিয়ে হতাশায় ছিল এবং বন্ধুদের সাথেও যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিল। 

উল্লেখ, গতকাল সোমবার বিকেলে নগরীর কাজলশাহ এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশ প্রতীকের ফ্যানে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

Bootstrap Image Preview