Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একটি স্বাভাবিক জীবন পেতেই ঝুঁকি নিয়েছি: সৌদি তরুণী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৪৯ AM
আপডেট: ১৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:৪৯ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কানাডায় পড়াশোনা, একটি চাকরি ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চান পরিবার থেকে পালানো সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল কুনুন। এগুলো তার নিজ দেশ সৌদি আরবে করার সুযোগ পেতেন না বলে তিনি মনে করেন।

সোমবার কানাডার একটি গণমাধ্যমে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যাংকক থেকে টরন্টো পৌঁছানোর দুদিন পর কানাডায় তিনি খুব ভালো বোধ করছেন বলেও জানান তরুণী রাহাফ।

তিনি বলেন, এ জন্যই আমি ঝুঁকি নিয়েছি।

তুচ্ছ কারনে বাপ-ভাইয়ের হাতে খুন হওয়ার ভয়ে পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে প্রাণে বাঁচতে ঘরপালানো ১৮ বছরের সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মেদ আল-কুনুন থাইল্যান্ড থেকে কানাডা পৌঁছেছেন। কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণার পর শুক্রবার রাতেই বিমানযোগে ব্যাংকক থেকে কানাডার উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি।

শনিবার টরন্টোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়া ফ্রিল্যান্ড। এ সময় তিনি রাহাফকে একজন ‘সাহসী নতুন কানাডিয়ান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

উল্লেখ্য, ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণী পরিবারের সঙ্গে ছুটিতে কুয়েতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি পালিয়ে ব্যাংকক হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে এবং হোটেলের একটি রুমের ভেতর আটকে রাখে। এর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা পোস্টের মাধ্যমে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকেন রাহাফ।

তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বাবা-মা ব্যাংককে এলে তাদের সঙ্গেও দেখা করতে অস্বীকার করেন রাহাফ। এর মধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন তার শরণার্থীর মর্যাদা পেতে করা আবেদন মঞ্জুর করেছে।

রুমের ভেতরে থাকাকালীন এক টুইটে রাহাফ জানিয়েছেন, তার কাছে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা আছে। কিন্তু বিমানবন্দরে সৌদি আরবের এক কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করেছেন।

পরে গণমাধ্যমকে রাহাফ জানান, ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন তিনি। সৌদি আরবে জোর করে ফেরত পাঠালে তার পরিবার তাকে হত্যা করতে পারে।

টুইটারে নিজের ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি প্রকাশ করে লিখেন, যেহেতু এখন আমার হারানোর কিছু নেই, তাই আমি আমার আসল নাম এবং সব তথ্য প্রকাশ করছি। আমার নাম রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন এবং এটা আমার ছবি।

নানা নাটকীয়তার একপর্যায়ে তাকে নিজ দেশে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর প্রেক্ষিতেই শুক্রবার রাতে কানাডাগামী বিমানে উড়াল দেন তিনি।

বিমানবন্দরে কুনুনকে স্বাগত জানানোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়া ফ্রিল্যান্ড সাংবাদিকদের বলেন, “কুনুন ‘একজন খুবই সাহসী নতুন কানাডিয়ান’। ”

ফ্রিল্যান্ড আরও বলেন, রাহাফ নতুন বাড়িতে পৌঁছে কানাডিয়ানদের দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর ভ্রমণ করতে হয়েছে। ফলে আজ তাকে কোনও প্রশ্ন না করাই শ্রেয়। সে এখন তার নতুন বাড়ি যাচ্ছে।

এর আগে টরন্টোর উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগে শেষ টুইটে কুনুন লিখেন, আমি পেরেছি। একই সঙ্গে তিনি একটি বিমানের ভেতরের ছবি পোস্ট করেন।

তবে কানাডা এমন একসময় তাকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করেছে, যখন সৌদি আরবের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে চরম টানাপড়েন চলছে।

গত বছর সৌদি আরবে আটক মানবাধিকারকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল কানাডা। এর পরই দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি শুরু হয়। কানাডার সঙ্গে সব নতুন বাণিজ্য স্থগিত করে দেশটি থেকে নিজেদের সব শিক্ষার্থীকে ফেরত যেতে নির্দেশ দেয় সৌদি আরব।

Bootstrap Image Preview