নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের লাইনের খুঁটিতে টানা তারের সংস্পর্শে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১৪ জানুয়ারি) ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ফলহারি বজলুর রহমান মাস্টারের বাড়ির দরজা সংলগ্ন পুকুর পাড়ে সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা ১নং নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পদুয়া হাজী বাড়ির লোক।
সূত্রে জানা যায়, সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ থাকায় বাড়ি চলে এসে পানির সেচপাম্প চালিয়ে সংসারে হাল ধরেন সালাউদ্দিন মিয়া ও তার একমাত্র সন্তান মাধ্যমিক স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মোঃ সৌরভ।
প্রতিদিনের মত সন্ধ্যায় সেচ দেওয়া শেষে বাড়ি ফেরার আগে সৌরভ পায়ের কাঁদা ধোঁয়ার জন্য পাশের একটি পুকুর পাড়ে যায়। এসময় সে পুকুরের পাড়ে পুঁতে রাখা বৈদ্যুতিক খুঁটির টানা তার ধরে নিচের দিকে ঝুলে পা ধোঁয়ার সময় তারটি বিদ্যুৎ লাইনের উপরে থাকা মূল তারের সঙ্গে লেগে বিদ্যুতায়িত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সৌরভ মারা যায়। এসময় কাছাকাছি থাকা বাবা সালাউদ্দিন ছেলেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যান।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, বাবা-ছেলেকে পানির মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে বিদ্যুৎ লাইনটি বন্ধ করতে পল্লী বিদ্যুতের কবিরহাট অফিস ও নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক শংকর লাল দত্তকে একাধিকবার ফোন করে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হলেও তারা আসেনি।
এসময় আশপাশের লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এলেও ভয়ে মরদেহ উদ্ধারে পুকুরে নামতে পারেনি। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মরদেহ দু’টি পুকুরেই পড়েছিল। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শহর থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এরপর রাত পৌনে ৯টার দিকে পল্লী বিদ্যুতের কবিরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।
লাইন নির্মাণে কোনও ধরনের ত্রুটি ছিল না দাবি করে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক শংকর লাল দত্ত বলেন, মোবাইল ফোনে খবর পাওয়া মাত্র কবিরহাট অফিসের লোকজনকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য বলা হয়। টানা তার ধরে ঝুলার কারণে ওই তার গিয়ে বিদ্যুতের মূল তারের সঙ্গে লেগে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্তে কারো কাজে কোনও গাফিলতি পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।