Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লন্ডন প্রবাসীকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে হত্যা, গ্রেফতার ২

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪৮ PM
আপডেট: ১৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪৮ PM

bdmorning Image Preview


হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা বাংলাদেশি বংশদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক জালাল উদ্দিন (৩৭) নামের এক যুবককে মৌলভীবাজারে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গত শনিবার গভীর রাতে মৌলভীবাজার থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল রোডে অবস্থিত উদ্দীপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাজিরগাঁও (পূর্ব) গ্রামের লুৎফুর রহমান খানের পুত্র সুহেল মিয়া (৩৬) এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া (উত্তর ভাড়াউড়া) গ্রামের কৃপেশ দেব এর পুত্র নয়ন দেব (২৮)। হত্যার অভিযোগে আটককৃত দু'জনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গিয়াস উদ্দিন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের গতকাল রবিবার বিকেলে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে অপর আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের মৃত ইছিরাব উল্লার পুত্র জালাল উদ্দিন গত এপ্রিল মাসে দেশে আসেন। জালাল মাদকাসক্ত থাকায় তাকে মৌলভীবাজারে অবস্থিত উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নামে নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করার জন্য নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক রিপন আহমেদ এর সাথে জালালের আত্মীয় নাজমুল হক যোগাযোগ করেন।

এ সময় উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পরিচালক রিপন সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করেতে পারবেন বলে আশ্বস্থ্য করেন। পরে গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে উদ্দিপন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কেন্দ্রের পরিচালক রিপন আহমদ ও সুহেল প্রবাসী জালাল আহমেদের বাড়িতে যান। এবং তারা জালালকে আটক করে নিয়ে এবং উক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করেন।

গত ৬ জানুয়ারি হঠাৎ আবার যোগাযোগ করলে ফোন ধরেননি পরিচালক রিপন। পরে সন্ধ্যার সময় পরিচালক রিপনের নাম্বার থেকে মুঠোফোনে প্রবাসী জালাল উদ্দিন এর আত্মীয় এবং মামলার সাক্ষী নাজমুল হক পিনুকে জানানো হয় জালাল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরেছে। আমরা তাকে সিলেট এম এজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাল চিকিংসা করানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছি।

এ খবর শুনে সাথে সাথে জালাল আহমেদ এর পরিবারের সদস্যরা জানার তারা দ্রুত সিলেটে এম এজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

কিন্তু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তারা জালালকে দেখার জন্য অনেক খোঁজ-খবর নেন কিন্তু তারা জালালকে উক্ত হাসপাতালে গিয়ে তার চেহারা ত দেখতে পাননি। বরং কিছুক্ষণ (ঘন্টাখানেক) পরে ওই একই ফোন নাম্বার থেকে আবার ফোন আসে এবং জানানো হয় 'জালাল মারা গেছে। আপনারা ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে না গিয়ে আমাদের মাদক নিরাময় কেন্দ্র মৌলভীবাজারে আমাদের অফিসে আসেন'।

এ কথা শুনে জালাল আহমেদ এর আত্মীয় স্বজনরা মৌলভীবাজার মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ছোটে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে প্রবাসী জালাল আহমেদের কাছে গিয়ে দেখতে পান সামনে একটি এ্যাম্ব্যুলেন্সের ভেতর জালালের মৃতদেহ দেখতে পান। কিন্তু এ সময় তারা নিরাময় কেন্দ্রের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

নিহত জালালের শরিরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত জালালের স্ত্রী রুমিতা বেগম বাদী হয়ে মৌলভীবাজার থানায় ৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Bootstrap Image Preview