বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে দুই যুবককে আটকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে জেলা পুলিশ।
গতকাল শনিবার ঘটনার শিকার দুই যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষ্য নিয়েছেন অতিরিক্ত (প্রশাসন) পুলিশ সুপার আবদুর রকিব। ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠা উপজেলার চরামদ্দি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ পরিদর্শক মো. সাইফুল গাজীকেও এসময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুর রকিব জানিয়েছেন, তিনি ঘটনাস্থল চরামদ্দিতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা তা অনুসন্ধান করেছেন। এটি বিভাগীয় বিষয়, তারা তদন্ত করে প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
ঘটনার শিকার যুবক মো: মোহন হাওলাদারের ভাই মো: সুমন হাওলাদার জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে তাদের চরামদ্দি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প থেকে খবর দেয়া হয়। তিনিসহ ঘটনার শিকার রনি ও তার ভাই কাওসার সেখানে যান। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের কাছে ঘুষ দেয়ার বিষয়ে জানতে চান। তারা স্বীকার করেছেন যে তাদের কাছ থেকে চরামদ্দি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ পরিদর্শক মো. সাইফুল গাজী ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এসময় সেখানে থাকা একজন পুলিশ সদস্য জানতে চান, টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে কিনা।
অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সুমন বলেন, টাকা ফেরত দেয়ার কোনো বিষয় নেই। তার ভাই কখনও সিগারেটও পান করেননি। অথচ তাকে গাঁজা দিয়ে আটক করে টাকা নেয়া হয়েছে। ওই টাকা তারা ফেরত চান না, ন্যায় বিচার চান। এসময় চরামদ্দি ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার হোসেন লাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুই যুবক মোহন ও রনিকে আটকের পর মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠে। উপজেলার চরামদ্দি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ পরিদর্শক মো. সাইফুল গাজীর নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গত সোমবার (৭ অক্টোবর) এ ঘটনা ঘটান।
ঘটনার শিকার দুই যুবক ও পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ তাদের পরিহিত জ্যাকেটের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে দেয়। পরে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে পুলিশ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে। টাকা নেয়ার পর আটক দুই যুবককে মাদক বিষয়ক নিয়মিত মামলায় না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে আড়াই হাজার টাকা করে জরিমানা দিয়ে মুক্ত হন দুই যুবক।