রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই চালের বাজারে অস্বস্তি। নবির্বাচনের সময় সরবরাহ কম থাকার আজুহাতে চালের দাম বাডিয়ে বাডিয়ে দিয়েছেন এক দল মুনাফা লোভি ব্যবসায়ী। আড়তদাররা বলছেন, মিল মালিকরাই সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ বেপরোয়া সিন্ডিকেটের কারণে সব চালেই বস্তাপ্রতি দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা দাম বেড়েছে।
পাইকারি আড়তদাররা জানান, নির্বাচনের আগেই মিল মালিকরা চালের মজুদ গড়ে তুলেন। তারা ওইসময় বাজারে কোনো চাল ছাড়েননি। এতে করে বাজারে চালের সরবরাহ কমে আসে।
ভোটের পর পরই তারা প্রতি বস্তায় ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছেন। ফলে আড়তদাররা নিজেরাও বস্তাপ্রতি আরো ২০ থেকে ৩০ টাকা লাভে চাল বিক্রি শুরু করেন।
নির্বাচনের আগে বাজারে ওঠা ৪৯ চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়। এখন সেই চালের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১ হাজার ৬৫০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা।
বিআর (২৮) ৫০ কেজি ওজনের ১ হাজার ৭৫০ টাকার প্রতি বস্তা এখন ১ হাজার ৯শ’ থেকে ১ হাজার ৯৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৩৫ টাকা কেজির চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৯ টাকা কেজিতে। আবার খুচরা বাজারেই এ চাল কিনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি আরো ৫ থেকে ৬ টাকা বেশিতে।
শহরের বাঁশবাড়ি কলোনী এলাকায় থাকেন রিকশাচালক সাইফুল ইসলাম (৩৫)। ৪ সদস্যের সংসার চালাতে প্রতিদিন তাকে দুই থেকে আড়াই কেজি চাল কিনতে হয়। এজন্য গড়ে তাকে ১শ’ টাকার ওপরে গুণতে হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিক্রেতারা নিজেদের মতো করে দাম বাড়াচ্ছেন। এতে করে আমাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
মিলারদের কাছে আড়তদাররা জিম্মি বলে অভিযোগ করেন ময়মনসিংহ জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজিম উদ্দিন কাজল বলেন, ‘চালের বাজার নিজেদের কব্জায় নিয়ে মিলাররা নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন।
তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার পর চালের বাজারের লাভ-লোকসান নির্ভর করে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী হলে মিলাররা এ অবৈধ সুবিধা নিতে পারতো না।’
এ দিকে মিলার দাবি করেন, ধান থেকে চাল তৈরিতে বস্তাপ্রতি একশ’ টাকা খরচ রয়েছে। এর সঙ্গে পরিবহন ব্যয়, শ্রমিক খরচাসহ আনুসাঙ্গিক নানা খরচের কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।