মিয়ানমারে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে রোহিঙ্গা নিধন। গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের বোচিডং চিন্দিফ্রাং থেকে পালিয়ে এসেছে ৭ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবার। তারা কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।
এ ব্যাপারে উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা (চেয়ারম্যান) রশিদ আহমদ জানান, ‘বোচিডং এলাকায় বসবাসরত তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সে দেশের বিদ্রোহী আরাকান আর্মি দমনের নামে সরকার পুনরায় বিজিপি সদস্যদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গারা এদেশে চলে আসার পর বোচিডংয়ের ক্যাথিও নামের একটি গ্রামে মিয়ানমার সরকার মুরুং মৌলবাদী জনগোষ্ঠীকে সেখানে পুনর্বাসন করেছিল। গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সেনারা সে গ্রামে অভিযান চালিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।’
রশিদ আহমদ আরও জানান, ‘বৃহস্পতিবার বিজিপির অভিযানে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে সেখানে নতুন করে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মিয়ানমার সামরিক জান্তার জ্বালাও, পোড়াও, উৎপীড়ন, নিপীড়ন, হত্যা, গুম ও গণগ্রেপ্তারের ভয়ে প্রায় ২০ লাখ রোহিঙ্গা গৃহবন্দি অবস্থায় মানবেতর দিনযাপন করছে। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকলে অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা চলে আসতে পারে।’
২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট রাখাইনে কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার জের ধরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। তাদের এ নিমর্মতা থেকে রক্ষা পেতে এদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমান সরকার এসব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সুনির্দিষ্ট একটি পর্যায়ে পৌঁছলেও মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের গ্রহণে অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রোহিঙ্গা নেতাদের দাবি তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তারা যে কোনো সময়ে সেদেশে ফিরে যেতে প্রস্তুত।