রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জাল পর্যটন ভিসা সরবরাহে জড়িত থাকার দায়ে ক্যানবেরাভিত্তিক বাংলাদেশের হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অত্যন্ত ছয়টি অভিযোগ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে বলে এসবিএসের প্রতিবেদনে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ সংস্থা এসবিএসের বলা হয়েছে, ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাল ভিসাসহ অন্তত ২০ রোহিঙ্গাকে আটক করার পর অস্ট্রেলিয়ায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন।
গণমাধ্যমটি জানায়, অস্ট্রেলিয়ায় গত ছয় বছর ধরে অবস্থান করা রোহিঙ্গা শরণার্থী ফারুক কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ মিশন থেকে পর্যটন ভিসা নিয়ে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় ভ্রমণ করেন।
কিন্তু জাল ভিসার অভিযোগে আরও কয়েক যাত্রীসহ তাকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশি অভিবাসী পুলিশ। পরের দিনই বিমানবন্দর থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
এসবিএসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের অভিবাসন পুলিশ ফারুকসহ অন্যান্য যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গত ২০ ডিসেম্বর তাদের অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত পাঠায়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্তৃপক্ষকে তারা বলেছেন, ক্যানবেরায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে তাদের ভিসা সংগ্রহ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার আরেক রোহিঙ্গা শরণার্থী আমান উল্লাহ এসবিএসকে বলেন, তিনি একটি ভিসার জন্য সাড়ে তিনশ ডলার দিয়েছেন। কিন্তু তাকে জাল ভিসা দেয়া হয়েছে।
আমান বলেন, জলা ভিসার খবর শুনে ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়েছিলাম। সেখানে হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি শামিমা পারভিন আমাকে বলেন, আমারটিও জাল ছিল। নতুন একটি ভিসা পেতে এ বিষয়ে পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে বলে তিনি আমাকে জানান।
এ বিষয়ে ঢাকায় এক অভিবাসন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তারা জাল ভিসাসহ বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছেন। তবে সঠিক সংখ্যাটি বলতে পারছেন না।
গত বছরের ডিসেম্বরে ক্যানবেরার উডেন পুলিশ স্টেশনে ছয়টি অভিযোগ করা হয়েছে।
এসবিএসকে দেয়া এক লিখিত বিবৃতিতে ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বলেন, ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ তারা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, অভিযোগ এলেই আমাদের কোনো কর্মকর্তা এতে জড়িত বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। যদিও সিডনি ও মেলবোর্ন থেকে আমরা কিছু এজেন্টের নাম পেয়েছি। এ সংক্রান্ত নথিধারীদের ওপর বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত কোনো প্রতিবেদন পাইনি। আমাদের কর্তৃপক্ষের তথ্যউপাত্তের ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়েক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।