একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবারেও শপথ নিয়েছেন নতুন মন্ত্রিসভায়।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনো আর্দশচ্যুত বা নীতির সঙ্গে আপস করেননি তিনি। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম তাকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। সততা, নির্লোভ ও কর্মনিষ্ঠার পুরস্কার স্বরূপ বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবিদ টানা ৪৫ বছর ধরে ক্ষমতার চেয়ারে অবস্থান করছেন এমন ধারণা গাজীপুরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের।
আ ক ম মোজাম্মেল হক পুনরায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার খবরে তাঁর নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দ প্রকাশ করে। এলাকায় মিষ্টি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়।
১৯৭৩ সালে গাজীপুরের জয়দেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, গাজীপুর পৌরসভা, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী এভাবে গত ৪৫ বছর ধরেই ক্ষমতার চেয়ারে রয়েছেন তিনি।
১৯৭৩ সালে ক্ষমতার চেয়ারে বসার পর এ পর্যন্ত তিনি আর চেয়ার চ্যুত হননি। আজ আবারও দ্বিতীয় মেয়াদে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে এক নাগাড়ে দীর্ঘদিন চেয়ারে থাকার অন্যন্য এক রেকর্ডের অধিকারী হবেন তিনি।
জানা গেছে, অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকের জন্ম ১৯৪৬ সালের পহেলা অক্টোবর। গাজীপুর মহানগরীর দাখিনখান এলাকার বাসিন্দা আ ক ম মোজাম্মেল হক ছাত্রাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
তৎকালীন গাজীপুর মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চে গাজীপুর থেকে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারীদের একজন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। বর্তমানেও তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মোজাম্মেল হক ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত জয়দেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে জয়দেবপুর গাজীপুর পৌরসভায় উন্নীত হলে তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা ২০০৮ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৩ লাখ ৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন তিনি।