Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিলুপ্তির পথে লাল হনুমান

হৃদয় দেবনাথ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:৪১ PM
আপডেট: ০৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:৪১ PM

bdmorning Image Preview


সবুজ বনের উঁচু গাছের ডালে ডালে ঘুরাঘুরি করে। চলাফেরা, খাবার সংগ্রহ, ঘুম, খেলাধুলা, বিশ্রাম, প্রজনন—সবকিছু গাছেই সম্পন্ন করে। সচারাচর দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। দলে থাকা শক্তিশালী পুরুষ দলের নেতা। এরা মুখপোড়া হনুমান বা লাল হনুমান নামেই পরিচিত। মহাবিপন্ন প্রাণীদের একটি লাল হনুমান। এরা খুব শান্তিপ্রিয় প্রাণী।

ঘুরে বেড়ায় দলবদ্ধভাবে, এ প্রাণীদের একেকটি দলে সচরাচর দুই থেকে ১৪টি প্রাণী থাকে। ওরা মহাবিপন্ন প্রজাতির প্রাণী তাই খুব একটা দেখা যায় না।

প্রাণী জগতের বেশিরভাগ প্রাণী আজ বিরল বা বিপন্ন প্রজাতিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। আর দিনে দিনে যত দ্রুত প্রাণী কমছে তত দ্রুতই প্রকৃতি হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য। সুন্দর এ প্রাণীদের একটি হচ্ছে মুখপোড়া হনুমান বা লাল হনুমান।

মুখপোড়া হনুমান বা লাল হনুমানকে সাধারণত মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, আদমপুর বিট ও রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণি অভয়ারণ্যে দেখা যায়। তাছাড়াও সিলেট এবং চট্টগ্রামে চির সবুজ বনে দেখা যায়। এরা শান্তিপ্রিয়, সাধারণত দিনের বেলায় বের হয়।দিন দিন মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল।

বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান দখল করে মানুষ গড়ছে ঘরবাড়ি ও কলকারখানা। দেশের প্রতিটি বন হারাচ্ছে জীব-বৈচিত্র্য। হুমকির মুখে আছে বেশির ভাগ প্রজাতির প্রাণীর ভবিষ্যৎ। এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়তো শুধু ছবির পাতাতেই খুঁজে পাওয়া যাবে প্রাণীজগৎ। হাজারও বৈচিত্র্যময় প্রাণীতে ভরপুর ছিল এ সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ। যা এখন অনেকটাই নেই বলেই চলে।

মুখপোড়া হনুমান বা লাল হনুমান মানুষের মতই প্রাইমেট বর্গের সদস্য 'লম্বা লেজওয়ালা'। এদের ইংরেজি নাম 'Capped Leaf Monkey', বৈজ্ঞানিক নাম 'Trachypithecus pileatus'।

মুখপোড়া হনুমানের লোমবিহীন মুখমণ্ডল, কান, হাত ও পায়ের পাতা কালো। মাথার চূড়া ও লেজের আগাও কালো। পিঠ ও দেহের ওপরের লোম গাঢ় ধূসর-বাদামি এবং বুক-পেট ও দেহের নিচ লালচে-বাদামি বা সোনালি। মাথার পেছনে লোম এমনভাবে মাথা ঢেকে রেখেছে দেখে মনে হবে যেন টুপি পরে আছে।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু মুসা শামসুল মুহিত এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিমর্নিংকে বলেন, এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ফুল, ফল ও কচি পাতা। তবে আমড়া, আমলকী, হরীতকী, বহেড়া ইত্যাদি ফলও বেশ পছন্দ। মার্চ–জুলাই মাসে এরা প্রজনন সম্পন্ন করে। বন-জঙ্গল ধ্বংসের কারণে দিনে দিনে এদের সংখ্যা যে হারে কমছে, এখনই কোনো ব্যবস্থা না নিলে বিপন্ন এ প্রাণী অচিরেই হারিয়ে যাবে।
 

Bootstrap Image Preview