Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেসব কারণে প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃত্যু বাড়ছে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:৫৮ PM
আপডেট: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


দিন দিন প্রবাসে বাড়ছে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই প্রবাসীদের মরদেহ আসছে বাংলাদেশে। নানা দুর্ঘটনা, স্ট্রোক ও দুর্বিত্তের হামলাসহ নানা কারণে মারা যাচ্ছে প্রবাসীরা।

মালেয়শিয়া দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় গত এক বছরে ৭৮৪ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃতের পরিসংখ্যানের তালিকায় প্রথমে আছে সৌদি আরব।

মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানেই মালয়েশিয়ার অবস্থান বলে জানিয়েছে দূতাবাস সূত্র। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েতের অবস্থান।

বিগত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ বাংলাদেশে এসেছে ২০১৮ সালে। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এ হিসাব পাওয়া গেছে।

হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে, সড়ক দুর্ঘটনা ও নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে এসব শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। তাদের মধ্যে স্ট্রোক করে বেশিরভাগ প্রবাসী মারা গেছেন বলে এক হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি সংগঠন জানায়, গত চার বছরে যত প্রবাসীর লাশ এসেছে, তাদের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে।

স্ট্রোকজনিত কারণে প্রবাসীদের অকালমৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনে ১২-১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং ধার করে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপ তাদের মৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো জানিয়েছে এই তথ্য।

দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছেন শরীয়তপুরের শাহ আলম হাওলাদার। তিনি জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিবাসী কর্মীরা ঋণ নিয়ে বিদেশে যায়। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার পর যে বেতনের কথা তাদের বলা হয়, তা তারা পায় না। এ ঋণের বড় বোঝার চাপ মানসিক চাপের সঙ্গে হাড়ভাঙা পরিশ্রম যোগ হয়। এভাবে শারীরিক ও মানসিক চাপে হার্টঅ্যাটাক করে মারা যান অনেক প্রবাসী শ্রমিক।

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেই বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। বিদেশ গমনের জন্য নির্ধারিত খরচের পরিমাণ কমালে বা সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে সহায়তা করলে টেনশনে এমন মৃত্যুর হার কমবে। আমি মনে করি, অভিবাসনের যে খরচ সেটি না থাকলে তাদের মধ্যে এই টেনশন কাজ করবে না। খরচ তুলে আনার বিষয়ে যে অস্থিরতা তাদের মধ্যে কাজ করে এটি আর থাকবে না।

হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে দুই হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে দুই হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে দুই হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে দুই হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে দুই হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে তিন হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে ফিরেছে।

২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে এসেছে ১০০৮, কুয়েত থেকে ২০১, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২২৮, বাহরাইন থেকে ৮৭, ওমান থেকে ২৭৬, জর্ডান থেকে ২৬, কাতার থেকে ১১০, লেবানন থেকে ৪০ জনসহ মোট তিন হাজার ৫৭ জনের লাশ দেশে ফিরেছে।

Bootstrap Image Preview