Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবাধে গড়ে উঠছে ইটভাটা

সৈয়দ রোকনুজ্জামান রোকন, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:০৮ PM
আপডেট: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:০৮ PM

bdmorning Image Preview


দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমি ও জনবসতি এলাকায় ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার নিবন্ধন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই। তার পরও বছরের পর বছর ধরে ইটভাটাগুলো চালু রয়েছে। ওইসব ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও খড়ি। কথিত ইটভাটা মালিক সমিতি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ইটভাটাগুলো চালু রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয় না এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

তবে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মশিউর রহমান রামপুর এলাকার বাবা ব্রিক্স প্রোঃ রুমি আক্তার নামে অবৈধভাবে নব-নির্মিত একটি ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া ওই এলাকায় কাগজপত্র না থাকায় ইউএনওর নির্দেশে আইনকে শ্রদ্ধা করে নিজের হাতে তৈরী করা ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছেন আরেক ইট ভাটা মালিক।

পরিবেশ আইনে বলা হয়েছে, জনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, কৃষিজমি, বাজার, স্কুল-কলেজ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ধোঁয়াবিহীন ইট পোড়াতে হবে। কৃষিজমি থেকে কোনো মাটি কেটে নেয়া যাবে না। এ ছাড়া ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করলে তিন বছরের কারাদণ্ড ও অনধিক তিন লাখ টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি সরজমিন ইটভাটাগুলো ঘুরে দেখা যায়, এই উপজেলার অধিকাংশই ইটভাটা কৃষিজমি ও জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটাগুলোতে শত শত মণ কাঠ ও খড়ির স্তপ করে রেখে অবাধে কাঠ ও খড়ি পোড়ানোর হচ্ছে।

এসআরবি ব্রিক্স নামের এক অবৈধ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর অপরাধে গত বছর এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছিল। তারপরও থেমে নেই খড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো। ভাটামালিক সোহরাওয়ার্দী বাবুলের মৃত্যুর পর হাল ধরেছেন তার ছেলে আবু শাহাদৎ সায়েম। তার অবৈধ ইটভাটাটি দাউদপুর বাজারের পূর্ব পাশে হেয়াতপুর মৌজায়। এলাকাবাসীর দাবি, অবৈধ এসআরবি ইটভাটার কারণে তাদের বিভিন্ন ফলের বাগানে আশানুরূপ ফল হচ্ছে না। শিশুদের নানা রোগবালাই লেগেই আছে।

এসব ইটভাটা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় নির্দেশ দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়নি।

ইটভাটা সংলগ্ন বাড়ির মালিকরা জানান, ইটভাটার কারণে তাদের ফলদ গাছগুলো নষ্ট হয়েছে। মাঠের ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়টি তারা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাননি। নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কেন ইটভাটাগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেননি এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটার মালিক বলেন, আইন মেনেই ইটভাটা করেছিলাম। কেউ আমার ওপর বিরাগভাজন হয়ে এই কাজটি করিয়েছেন। তার ইটভাটাটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব বলে তিনি জানিয়েছেন।

৮-১০টি ইটভাটার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশই ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র ও নিবন্ধন নেই। প্রতি বছর ইটভাটা চালুর পরপরই উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতিকে তাদের মোটা অঙ্কের চাঁদা দেন। ইটভাটা মালিক সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনকে খুশি রাখেন। 

Bootstrap Image Preview