Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পরপারে চলে গেছেন যারা

সালতামামি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৩ PM
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৩ PM

bdmorning Image Preview


চলতি বছর চলচ্চিত্র, সঙ্গীত ও নাটকের বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি তারকার জীবনাবসান হয়েছে। তাদেরকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান ছিলো পুরো শোবিজ অঙ্গন। তাদের এই চলে যাওয়া শিল্পের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কর্মে বিশেষ অবদানের জন্য সবসময় স্মরণ করবে বাংলাদেশ। চলুন জেনে নেয়া যাক অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীদের কাঁদিয়ে চলতি বছরে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন যারা-

সিরাজ হায়দার

বছর শুরুতে বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সিরাজ হায়দার মৃত্যুবরণ করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১১ জানুয়ারি ৭১ বছর বয়সে জনপ্রিয় এই অভিনেতা পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

শাম্মী আক্তার

ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৬ জানুয়ারি দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী শাম্মী আক্তার পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। ‘ঢাকা শহর আইসা আমার’খ্যাত এই গায়িকার বয়স হয়েছিলো ৬২ বছর। প্রায় তিন শতাধিক সিনেমার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।

কাজী আজিজ আহমেদ

‘চোখ যে মনের কথা বলে’ গানের গীতিকার কাজী আজিজ আহমেদ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩০ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি একাধারে চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা এবং পরিচালক ছিলেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।

আলী আকবর রুপু

২২ ফেব্রুয়ারি দেশের বরেণ্য সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আলী আকবর রুপু চলে যান না ফেরার দেশে। প্রায় দুই যুগ ধরে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র অসংখ্য গানের সুর করছিলেন তিনি। উপহার দিয়েছেন অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী

এবছরের ৬ মার্চ খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা-ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। হৃদরোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পদক পান। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মুক্তিযোদ্ধা খেতাব প্রদান করে।

রানী সরকার

৮৬ বছর বয়সে ৭ জুলাই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন সত্তর দশকের জনপ্রিয় খল-অভিনেত্রী রানী সরকার। প্রায় আড়াইশ সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। রানী সরকার একসময় পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করলেও শেষ বয়সে এসে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন।

আইয়ুব বাচ্চু

এ বছর বাংলা সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি, জনপ্রিয় ব্যান্ডদল এলআরবি’র লিড গিটারিস্ট ও ভোকাল আইয়ুব বাচ্চু না ফেরার দেশে চলে যান। ১৮ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আইয়ুব বাচ্চু দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের অসুস্থতায় ভোগেন।

আনোয়ার হোসেন

১ ডিসেম্বর ঢাকার একটি হোটেলের কক্ষ থেকে প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বয়স হয়েছিলো ৭২ বছর। তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

মঞ্জুর হোসেন

৭ ডিসেম্বর প্রবীণ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা মঞ্জুর হোসেন ৮১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমা পরিচালনা ও প্রযোজনা করতেন। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘রাজধানীর বুকে’।

আমজাদ হোসেন

১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য তাকে একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

সাইদুল আনাম টুটুল

লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান প্রখ্যাত নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল। ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

সরকার ফিরোজ

২০ ডিসেম্বর অভিনেতা ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সরকার ফিরোজ সরকার ফিরোজ মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রের (এখনকার বিটিভি) একজন ঘোষক ছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছর দেশের টেলিভিশন মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সরকার ফিরোজ।

মোহাম্মদ ইদ্রিস

২২ ডিসেম্বর মারা গিয়েছেন দেশের প্রথম ডাক বিভাগের খামের নকশাকার মোহাম্মদ ইদ্রিস। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি ছিলেন শিল্পী জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠিত আর্ট কলেজের তৃতীয় ব্যাচের ছাত্র। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পর মুদ্রা, চিঠির খাম, ডাকটিকিট, জাতীয় প্রতীক, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের মনোগ্রামসহ নানা কিছুর পরিবর্তনে কামরুল হাসানের তত্ত্বাবধানে কাজ করেন মোহাম্মদ ইদ্রিস। তার করা শাপলা ফুলের নকশার সেই প্রথম চিঠির খাম এখনও ব্যবহার করতে দেখা যায়।আত্মপ্রচারবিমুখ ছিলেন তিনি। জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছেন গ্রামবাংলার নানা রকম হস্তজাত শিল্পের উৎকর্ষসাধন ও তার প্রসারে।

Bootstrap Image Preview