স্নায়ুযুদ্ধকালীন একটি পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির সুরক্ষায় জাতিসংঘে আনা রুশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ৪৬টি, পক্ষে ভোট পড়ছে ৪৩টি। ভোটদানে বিরত ছিল ৭৮টি দেশ।
শনিবার তোলা ‘প্রিজার্ভেশন অব অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স উইথ দ্য ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’ শীর্ষক প্রস্তাবটিতে চুক্তি কার্যকর রাখার পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন প্রত্যাশা করেছিল মস্কো। চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধেই ভোট দিয়েছে। খবর এএফপির।
সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের মধ্যে ১৯৮৭ সালে ‘ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস’ (আইএনএফ) নামের ওই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছিল।
চুক্তির আওতায় ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ৩১০-৩,৪২০ মাইল পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়। রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সর্বশেষ ২০১১ সালে সই হয় নিউ স্টার্ট চুক্তি।
সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, দুই দেশেই তাদের প্রস্তুত পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা এক হাজার ৫৫০টিতে সীমিত রাখার বিষয়ে সম্মত হয়। একই সঙ্গে নিজেদের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে অন্য পক্ষকে নিয়মিত তথ্য দেয়ার বিষয়টিও চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়, যা দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার ভিত তৈরি করেছিল। চুক্তিটি সর্বশেষ নবায়ন হয় ২০১৬ সালে। পাঁচ বছর পরপর এটি নবায়ন করার কথা। এ হিসাবে ২০২১ সালে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ ফুরাচ্ছে।
ভোটাভুটির আগে মার্কিন প্রতিনিধি বলেছেন, ‘এই প্রস্তাব মস্কোর চালাকি। কারণ তারাই বারবার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছে। যদি সত্যি চুক্তিত রক্ষা করতে চাইত তাহলে তারা গত পাঁচ বছরের মধ্যেই চুক্তি মেনে চলার যাচাইযোগ্য প্রমাণ হাজির করত।’ জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রতিনিধি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে যেতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনছে সেগুলো ভিত্তিহীন।’
প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়া চীন বলেছে, তারা চুক্তিটি রক্ষা করতে চায়। চীনের প্রতিনিধির ভাষ্য, কোনো পক্ষ একতরফা সিদ্ধান্তে চুক্তি থেকে চলে যাক, এটা তাদের প্রত্যাশা নয়। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড ভোট দিয়েছে রাশিয়ার প্রস্তাবের বিপক্ষে। তাদের প্রতিনিধির ভাষ্য, চুক্তিটির গুরুত্ব তারা স্বীকার করে।