Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কেরাণীগঞ্জের জন্য ৫০ বছরের ডিটেইল এরিয়া মাস্টারপ্লান তৈরি করছি: নসরুল হামিদ বিপু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৫ AM
আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু'র জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে ১৯৬৪ সালের ১৩ নভেম্বর। তার পিতা মরহুম হামিদুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুব কাছের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নসরুল হামিদের মা হাসনা হামিদও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন।

বিপু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত University of Harvard এর John F. Kennedy School থেকে Certificate Program on Leadership সম্পন্ন করেন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ঢাকা-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত।

৮ ডিসেম্বর-২০১৮ কেরাণীগঞ্জের নিজ বাসায় বিডিমর্নিংকে তিনি একান্ত সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। সাক্ষাৎকারটি নেন বিডিমর্নিং এর হেড অব নিউজ ফারুক আহমাদ আরিফ। সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্যে তুলে ধরা হলো।

ফারুক আহমাদ আরিফ: চলতি মাসেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আপনার ভাবনা ও প্রস্তুতি কেমন?

নসরুল হামিদ বিপু: নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি সব সময়। সারা বছর। আমি এখানে ১০ বছর যাবত সংসদ সদস্য আছি। আমার প্রতিনিয়ত, প্রতি সপ্তাহে এলাকায় আসা হয়। সুতরাং আমার প্রস্তুতি সারা বছরই চলে। এলাকায় প্রচুর কাজ হয়েছে, উন্নতি হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপত্তা, অবকাঠামো সব দিকেই উন্নতি হয়েছে। সবমিলে প্রস্তুতি ভালো।

ফারুক আহমাদ আরিফ: আপনি ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন কেরাণীগঞ্জকে সেরা উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। এ জন্য কী কী উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন?

নসরুল হামিদ বিপু: ইতিমধ্যে সেরা উপজেলা হিসেবে অনেকটা এগিয়ে গেছি। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম শিক্ষাখাতে। কেরাণীগঞ্জ শিক্ষায় অনেক পিছিয়েছিল। ১০ বছর আগের শিক্ষার হার আর এখনকার হারের মধ্যে পার্থক্য করলে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। এখনকার শতভাগ মেয়ে বিদ্যালয়ে যায়। শিক্ষার মান ভালো। অচিরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এখানে চলে আসতেছে। প্রধানমন্ত্রী ৬শ বিঘা জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। নামকরা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবে। তা ছাড়া কয়েকটা ভালো স্কুলও হবে। প্রাইমারি ও হাই স্কুলগুলোর প্রায় প্রতিটির নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। শুধু কেরাণীগঞ্জ নয় সারাদেশের ছেলে-মেয়েরা বছরের প্রথম দিনই নতুন বই পেয়ে যায়। এতে সকলের উৎসাহ, উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেরাণীগঞ্জও সেই উৎসবে সামিল।

ফারুক আহমাদ আরিফ: এখানকার জন-নিরাপত্তা?

নসরুল হামিদ বিপু: জন-নিরাপত্তা কেরাণীগঞ্জে বড় বিষয় ছিল। ১০ বছর আগে এখানে সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল। বর্তমানে এটি শান্তির জনপদ। রাজনৈতিকভাবে আমরা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেই না, যা বিএনপি-জামাত দিত। তারা কেরাণীগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছিল। এখন স্বাচ্ছন্দে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে। জনগণ যাতায়াত করতে পারছে।

ফারুক আহমাদ আরিফ: অবকাঠামো নির্মাণ?

নসরুল হামিদ বিপু: অবকাঠামো নির্মাণে কেরাণীগঞ্জ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটি হচ্ছে পদ্মাসেতুর প্রধান এপ্রুচ সিটি। যার কারণে এখানে সিক্স লেন, এক্সপ্রেস হাইওয়ে, ফোর লেন তৈরি হচ্ছে। সাথে সাথে সাব-লেনগুলোর নকশাও তৈরি হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এগুলো উন্নত রাস্তা হিসেবে ধারণ করবে। রাস্তার উন্নয়নের সাথে সাথে বিদ্যুতের লাইনগুলো আন্ডারগ্রাউন্ড করা হচ্ছে। সুয়ারেজ, ওয়াটার সব আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন অত্যাধুনিক হবে। এটিই আমাগীদিনের আধুনিক কেরাণীগঞ্জ।

ফারুক আহমাদ আরিফ: ক্রীড়া ক্ষেত্রে কেরাণীগঞ্জের অবস্থান?

নসরুল হামিদ বিপু: খেলাধুলায় আমরা সব সময় ভালো করতাম। মাঝখানে বিএনপি-জামাত খেলাধুলার মাঠগুলোকে প্লট বানিয়ে বিক্রি করে ফেলেছে, বাণিজ্য করেছে। এখানে নতুন করে নিজেদের অর্থে অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। খেলাধুলা হচ্ছে। স্টেডিয়ামে থার্ডিভিশন ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। এখানকার একাডেমিতে ২ শতাধিক খেলোয়াড় আছে। মেয়েদের খেলাধুলা প্রচণ্ডভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে হ্যান্ডবল। তারা জেলায় চ্যাম্পিয়ন ফাইড দিচ্ছি। আগে এগুলো ছিল না। এখন হচ্ছে। সারা বছরই খেলাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে। ফুটবল, ক্রিকেট, কাভাডিসহ নানা ধরনের খেলাধুলার টুর্নামেন্ট হচ্ছে। স্কুল, কলেজসহ প্রতিটি মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে, হচ্ছে।

বিডিমর্নিং এর সাথে সাক্ষাৎকারে বিদ্যুৎ, জ্বালানী খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু

ফারুক আহমাদ আরিফ: স্বাস্থ্যসেবাখাতে কেরাণীগঞ্জের কী অবস্থা?

নসরুল হামিদ বিপু: এখানকার ক্লিনিকগুলোর খুব খারাপ অবস্থা ছিল। অপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হতো। এখন আমরা এগুলোর উন্নতির দিকে মনযোগ দিয়েছি। সরকার এখানে ৫০০ বেডের অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করছে। দরিদ্রমানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া নিশ্চিত হবে। অন্যান্য ক্লিনিকগুলোর জন্যেও সরকারি বরাদ্দ পেয়েছি। সেসবের উন্নয়নে কাজ করছি। আগামীদিনে কেরাণীগঞ্জ স্বাস্থ্যখাতে চরম উন্নতি করবে।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বাসস্থান?

নসরুল হামিদ বিপু: কেরাণীগঞ্জ ঢাকার সন্নিকটে হওয়ায় এখানে সবার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। সারা বাংলাদেশ থেকে এখানে বাসস্থান করার জন্যে মানুষ চলে আসে। আমাদের জমির দাম অনেক। বাসস্থানের সাথে যেসব সুযোগ-সুবিধা তথা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত ব্যবস্থা সব যেন পরিকল্পিতভাবে তৈরি হয়। আমরা ৫০ বছরের ডিটেইল এরিয়া মাস্টারপ্লান তৈরি করছি। খাল, বিল, নদী রক্ষায় বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। শুভাড্যা খালকে আধুনিকায়নে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সে মোতাবেক কাজ চলছে। খালগুলো সংস্কার করা হলে মানুষ আধুনিক কেরাণীগঞ্জ পাবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরিতে কেরাণীগঞ্জ হবে বাংলাদেশের মডেল।

ফারুক আহমাদ আরিফ: আপনি টানা দুই মেয়াদে ঢাকা-৩ (কেরাণীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য রয়েছেন। এরমধ্যে এক মেয়াদে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। জ্বালানী খাতের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কতদূর এগিয়ে নিতে পেরেছেন?

নসরুল হামিদ বিপু: বিদ্যুৎ ও জ্বালানীখাতের উন্নতি সারা বাংলাদেশ বলবে। কারণ জ্বালানী ও বিদ্যুৎখাতে আমরা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ৯৪ ভাগ গ্রাম, শহরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি, আমাদের টার্গেট ১০০ ভাগ বিদ্যুতায়ন। জ্বালানী নিরাপত্তা বাংলাদেশে বড় একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। সেটি আমরা কিভাবে নিশ্চিত করতে পারি সেজন্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা বিপসি থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে আসছি। ইতিমধ্যে পাইপিং করা হয়েছে। গ্যাসের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে অনেক ভালো। তেল নেওয়ার জন্যে বিপসি টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে তেল আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে কার্গো ব্যবহৃত হতো। এতে ঝামেলাও হতো। এখন পাইপ লাইন তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশে জ্বালানীটা যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিয়েছি। খুলনায় দ্বিতীয় টার্মিনাল তৈরি করেছি। বাঘাবাড়িতে তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি করছি। আমি মনে করি আগামী দিনে জ্বালানীখাতে আমরা যথেষ্ট সিকিউট হবো। এ খাতে আমরা সাফল্য অর্জন করছি। আরও এগিয়ে যাবো।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বিএনপি সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী উন্নয়নের চিত্র কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? আর আপনার এলাকা?

নসরুল হামিদ বিপু: বিএনপির একটা সুযোগ ছিল। সেসময় তারা সরকার গঠন করেছিল তখন যদি পকেটের দিকে নজর না দিয়ে দেশের মানুষের দিকে নজর দিত তবে মানুষের অনেক কল্যাণ হতো। তারা এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। একটি পাওয়ার প্লেন্ট তারা নির্মাণ করতে পারেনি। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়েছে। মানুষ আস্থা রেখে তাদের ভোট দিয়েছিল কিন্তু তারা তা রক্ষা করতে পারেনি। কারণ তারা বেশির ভাগ নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে সরকার গঠন করেছিল। যেহেতু মানুষের কাছে তাদের অঙ্গীকার ছিল না। বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিগত দিনে ফেল করেছে। আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম থেকে জনগণের দিকে তাকিয়ে প্ল্যান-প্রোগ্রামগুলো তৈরি করেছেন। সাধারণ মানুষকে কীভাবে দ্রুত শিক্ষিত করা যায়? কীভাবে তাদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া যায়? কীভাবে তাদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়? এসব দেখে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। তার চিন্তার ব্যবহার আপনারা দেখছেন। সে অনুযায়ী সারা বাংলাদেশ তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে বাহবা দিচ্ছে।

ফারুক আহমাদ আরিফ: ব্যক্তি নসরুল হামিদ বিপু ও রাজনীতিক নসরুল হামিদ বিপুকে কীভাবে পার্থক্য করবেন?

নসরুল হামিদ বিপু: আমি মোটেও পার্থক্য দেখি না। আমার ব্যক্তিজীবন ও রাজনীতিজীবন একই। সারাদিনই রাজনীতি করি। তবে আমি আমার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই, তারা প্রচণ্ড ধৈর্য্যের সাথে আমার ঝামেলাগুলো মাথায় নেন। আমাকে সহযোগিতা করেন। উৎসাহ দেন। বিশেষ করে আমার এলাকার সাধারণ জনগণ। আমার উপর তাদের পুর্ণাঙ্গ আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি। সেটি নিয়েই এগিয়ে যাবো। সবাইকে ভালোবাসবো। তাদের আস্থা নিয়েই ভালো রাজনীতিবিদ হওয়ার সিঁড়িটা ধরতে পারবো, এগিয়ে যাবো।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বেশির ভাগ রাজনীতিবিদরা একে অন্যকে আঘাত করে। কুৎসা রটনা করে। সেক্ষেত্রে আপনি ব্যতিক্রম। আপনি কারো আঘাত করে কথা বলেন না, কেউ আপনাকেও আঘাত করে বলেন না। কোন দিকটা চিন্তা করে এই চরিত্রটা বা ব্যক্তিত্বটা তৈরি করলেন?

নসরুল হামিদ বিপু: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সবাইকে নিয়ে। তিনি ভালোবাসতেন বাঙালিকে, মানুষকে। সকলই তার কাছে সমান ছিল। আমরা সেই আদর্শে বিশ্বাসী। আমার বাবা এখানকার সংসদ সদস্য ছিলেন। তারাও রাজনীতি করেছেন। আঘাত করে কারো মন পাওয়া যায় না। আমি মনে করি সকলের সাথে মিলেমিশে আমাদের পরিবেশটা ঠিক রাখবো। রাজনীতিও করবো তাই।

ফারুক আহমাদ আরিফ: আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতিহারে বলা হয়েছিল ২০২১ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ হাজার ৬২৩ মে.ও. বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। ৩ বছরে ৮ হাজার ৩৭৭ মে.ও উৎপাদন সম্ভব?

নসরুল হামিদ বিপু: এখানে একটা হিসেবে ভুল আছে। আমাদের ক্যাপাসিটি ২০ হাজার মেগাওয়াটের, ক্যাপ্টিপসহ। বাকি থাকে ৪ হাজার। ২০২১ সালের বহু আগেই আমরা ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ফেলবো ইনশাল্লাহ।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ উত্তোলনে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে?

নসরুল হামিদ বিপু: আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং সেভাবে পড়ানো হয় না। তাই শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। মাইনিং টেকনোলজি সেভাবে চিন্তা করে কাজ করা হয়নি। আমরা এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানীতে পাঠানো হচ্ছে, তারা মাইনিং দেখছে। আশা করি ৫/৭ বছরের মধ্যে আমরা মাইনিং করতে পারবো।

ফারুক আহমাদ আরিফ: পেট্টো বাংলাকে আধুনিকায়নে কি কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার?

নসরুল হামিদ বিপু: পেট্টো বাংলা অচিরেই ডিজিটালাইশন হচ্ছে। যেহেতু বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আমরা ইআরপি সিস্টেমে চলে গেছি, সেহেতু পেট্টো বাংলাও সেদিকে যাবে। বিশেষ করে মাইনিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে তাদের ইন্টিগ্রেডেড ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ে আসা। সেই চেষ্টায় তারা করছে। আমরা ফিল্ড স্টাডি করে ফেলেছি। বিশেষ করে কোল্ডফিল্ডগুলো। কয়লা কত সাশ্রয়ে ব্যবহার করতে পারি পরিবেশকে সাথে নিয়ে সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছি।

ফারুক আহমাদ আরিফ: সমুদ্র সম্পদকে কীভাবে আরও যুগোপযুগীভাবে ব্যবহার করতে পারি?

নসরুল হামিদ বিপু: আমাদের যতদ্রুত সম্ভব গভীর সমুদ্রে মাল্টিক্লাইন্ড সার্ভের দিকে যেতে হবে। সেই সার্ভের মাধ্যমে আমাদের ব্লকগুলো টেন্ডার করা উচিত। তাহলে আমরা রেজাল্ট পাবো আমাদের কি ধরনের সম্পদ আছে? বিশেষ করে খনিজের দিকে। আমরা সেই চেষ্টায় করছি কত দ্রুত মাল্টিক্লাইন্ড সার্ভের দিকে যাওয়া যায়।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বর্তমানে আপনার এলাকায় উন্নয়নের যে কার্যক্রম চলছে, তা অব্যাহত রাখতে আগামীতে কী কী পরিকল্পনা আছে?

নসরুল হামিদ বিপু: অনেক...। কেরাণীগঞ্জ হবে বাংলাদেশের আধুনিক, পরিবেশবান্ধব শহর। যেখানে সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে পারবে।

ফারুক আহমাদ আরিফ: আপনার আসনের ভোটার ও দেশবাসীর কাছে আগামী নির্বাচনে আপনার ও দলের প্রত্যাশা কী?

নসরুল হামিদ বিপু: প্রত্যাশা হচ্ছে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আপনারা (জনগণ) আমাদের (আওয়ামী লীগের) উপর যে আস্থা রেখেছিলেন, গত ১০টি বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌকা মার্কা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে হাজির করেছে। একটি উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছি। সেভাবে এবারও আমাদের উপর আস্থা রাখেন। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে বাংলাদেশ তৈরি হচ্ছে তা অব্যাহত রাখতে সারাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি উন্নত দেশ হিসেবে হাজির করার অধিকার দিবেন।

ফারুক আহমাদ আরিফ: বিডিমর্নিংকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

নসরুল হামিদ বিপু: বিডিমর্নিং এর পাঠক, গ্রাহকসহ সবাইকে ধন্যবাদ।

এক নজরে বিপু: নসরুল হামিদ বিপু তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি আওয়ামী লীগের তৃণমুল পর্যায় থেকে আস্তে আস্তে সাংগঠনিক পদ্ধতিতে আজকের এই পর্যায়ে এসেছেন। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ছিলেন।

১৯৯৭ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সহকারী সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং ১২ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নসরুল হামিদ একজন সফল ব্যবসায়ী ও সংগঠক। তিনি হামিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, রিহ্যাব এর সাবেক সভাপতি এবং আবাহনী স্পোর্টিং ক্লাব এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Bootstrap Image Preview