মেয়েদের ভোট দেওয়া ইসলামবিরোধী কাজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন চাঁদপুর জেলাধীন ফরিদগঞ্জ উপজেলার এক পীর। তার নির্দেশের কারণেই উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের নারীরা ভোট দেন না।
স্থানীয়রা জানান, ৪৭ বছর ধরেই এই চিত্র চলে আসছে এ ইউনিয়নে। স্থানীয় প্রশাসন বহু চেষ্টা করেও নারীদের ভোট কেন্দ্রে আনতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। এমনকি নারীদের মধ্যে যারা শিক্ষিত, তারাও আসেন না কোনো নির্বাচনে।
রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৪ হাজার ৪৫৪ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ১২ হাজার ১শ’ ১৪ জন। তারা সবাই ভোটার তালিকায় নাম উঠাতে ছবি তুলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রও নিয়েছেন। ভোট না দিলেও নিত্যদিন ঘরের বাইরে যান এই। কিন্তু ভোটের দিন সবাই থাকেন ঘরের ভেতরে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর জৈনপুরের পীরের অনুসারী মাওলানা মোহাম্মদ হাছান মওদুদ নামে স্থানীয় একজন পীর এই ফতোয়া জারি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তিনি দাবি করেন, মেয়েদের ভোট দেয়া নাজায়েজ কাজ। এরপর ১০টি সংসদ নির্বাচন আর কোনো স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেননি হাজার-হাজার নারী।
এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই ইউনিয়নের নারীরা ভোট দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।
যদিও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইসকান্দার আলী মিয়া বলেন, এবার পরিস্থিতি পাল্টাবে। একটি গুজব উঠেছিল, তবে সমস্ত ব্যাপার সমাপ্ত হয়ে গেছে। এখন মহিলারা আসবে এবং ভোট দেবে।’
ফতোয়া জারি করা পীর হাছান অবশ্য বেঁচে নেই। তিনি পাঁচ বছর আগেই মারা গেছেন। আর এ কারণে এবার নারীদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে আশাবাদী স্থানীয় প্রশাসন।
নারী ভোটারদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই নির্বাচনে নারী ভোটারসহ সবাই যাতে ভোটকেন্দ্রে যান, সে জন্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এবং কমিশনের প্রতিনিধি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আমাদের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।