Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পর্বত জয়ের নেশায় বাংলাদেশি অভিযাত্রীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:০৮ PM
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:০৮ PM

bdmorning Image Preview


আজ (১১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস। মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের স্বপ্নটা বাংলাদেশের পূরণ হয়েছে ২০১০ সালেই। এরপর থেকেই তরুণদের মধ্যে মাউন্টেনিয়ারিংয়ে আগ্রহ বাড়তে থাকে। নানা প্রতিকূলতা আর বাঁধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের তরুণরা আরোহণ করেছেন বিশ্বের অনেক পর্বত। পিছিয়ে নেই নারীরাও। নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাসরিনের মতো নারীরা তো রীতিমতো ইতিহাস গড়েছেন। মুসা ইব্রাহীম আর আব্দুল মুহিতও বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গে তুলেছেন বাংলাদেশের নিশান। তেমনি এ বছর বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার অ্যান্ড ট্যুরিজম সোসাইটি (ব্যাটস) এর ২০ জন অভিযাত্রী জয় করেছেন ভারতের ৬১১১ মিটার উচ্চতার মাউন্ট ইয়ানাম পর্বত।

৬১১১ মিটার উচ্চতার মাউন্ট ইয়ানাম, যা ভারতের হিমাচল প্রদেশের লাহুল-স্পিতি রিজিয়নে পড়েছে। মাউন্ট ইয়ানাম জয় করা এই ২০ জনের একজন মামুন রনি। নিজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে তিনি বলেন, ‘গেলো ৬ আগস্ট ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে দিল্লীর উদ্দেশ্যে উড়াল দিলাম আমরা ২৫ জন। দিল্লী থেকে মানালী যাওয়ার জন্য আমরা আগে থেকেই বাস রিজার্ভ করে রেখেছিলাম। কারণ মানালীর সব বাস চলে যায় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৮.৩০ এর ভিতর। আর আমরা দিল্লীতেই পৌঁছাব রাত ১২.৪০ মিনিটে। দিল্লী পৌঁছে মালপত্র নিয়ে চলে গেলাম শার্টল বাসে । শার্টল বাসে করে গেলাম কাশ্মীরী গেইট। রাত ২ টায় আমাদের বাস ছাড়ে আর কুল্লুর রাইসনে আমাদের হোটেলে পৌঁছাই পরের দিন ৭ আগস্ট দুপুর ২.৩০ মিনিটে। ৭ এবং ৮ আগস্ট রাত কুল্লুতে কাটিয়ে আমরা আমাদের আসল অভিযানে বের হই। ৯ আগস্ট একদম ভোর ৫ টায় আমাদের যাত্রা শুরু হয়। আমাদের প্রাথমিক গন্তব্য পাতসিও। এখানে আমরা আমাদের প্রথম এক্লিমেটাইজেশন সেশন রাখি। পাতসিও এর উচ্চতা ৩৭৫০ মিটারের মত। এক্লিমেটাইজ করতে প্রতিদিন আশপাশের পর্বতগুলাতে ২৫০-৩০০ মিটার ওঠা নামা করতে হয়েছে আমাদের।  এতবড় টিমকে এক্লিমেটাইজ করার জন্য এটাই সব থেকে ভালো পন্থা মনে হয়েছে আমাদের। তিন রাত পাতসিওতে থাকার পর আমরা আবার যাত্রা শুরু করি আমাদের বেইজ ক্যাম্প ভরতপুরের উদ্দেশ্যে।’

তিনি আরো জানান, ‘১২ এবং ১৩ আগস্ট দুই রাত আমরা ভরতপুরে থাকি। এরপর ১৪ আগস্ট সকাল ৯ টায় আমরা আমাদের প্রথম ক্যাম্পের জন্য বের হই। ৫৪৬০ মিটারে আমরা আমাদের প্রথম ক্যাম্প স্থাপন করি। যেহেতু বড় টিম সেহেতু আমাদের বেশি চাপ নেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। পরের দিন আমরা আমাদের ৫৭৬০ মিটারে দ্বিতীয় ক্যাম্প স্থাপন করি। সেখানে রাতের বেলা আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়। সামিট পুশের সময় ঠিক করা হয় ১৬ আগস্ট রাত ৩ টা। এর ভিতর কয়েকজন মাইগ্রেনের ব্যথার জন্য সামিট পুশ দিতে রাজি হয় না। সামিট পুশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর একজন মাথা ব্যাথার জন্য ক্যাম্পে ফিরে আসে। সকাল ৭.১০ মিনিটে আমরা সামিটে পৌঁছাই। টিমের শেষ সদস্যটি সকাল ৯.৩০ মিনিটে সামিটে আসে। সেখানে আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেকের চোখেই পানি দেখতে পেয়েছি। ২৪ জনের ভিতর ২০ জন সামিটে পৌঁছাতে পেরেছে, এটাই আমাদের অর্জন। এরপর ক্যাম্প-২ তে নেমে আসি। দুপুরের খাবার খেয়ে আবার ভরতপুরে আমাদের বেইজ ক্যাম্পে নেমে আসি। সবাই বেইজ ক্যাম্পে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা নেমে যায়। সবাই সুস্থভাবে আমরা ১৯ আগস্ট দেশে ফিরে আসি।’

পর্বত আরোহে সাহায্যকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এই অভিযাত্রী জানান, ‘ট্রিপে আমাদের সাথে ৩ জন শেরপা,  ৪ জন পোর্টার এবং ৩ জন কিচেন স্টাফ ছিলেন। যাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যারা না থাকলে এই অভিযান কখনোই সাফল্য পেত না।’

Bootstrap Image Preview