পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, উন্নত বিশ্বে সরকার পরিবর্তন হলেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেমে থাকে না কারণ তারা পূর্ববর্তী সরেকারের কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। এক সরকারের কাজ অন্য সরকার ভালোভাবে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু আমাদের দেশে এর উল্টো হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের সংস্কৃতি অন্যরকম, তাই উন্নয়ন ধরে রাখতে আমাদেরকে সরকারের ধারাবাহিকতা রাখা প্রয়োজন। তবে দিন দিন অনেক পরিবর্তন হয়ে আমাদেরও মনমানসিকতা উন্নত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনের আগের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও তার অনেকটা প্রমাণ বহন করে। সবগুলো রাজনৈতিক দল অত্যন্ত সুন্দরভাবে ব্যাপক উৎসাহের সাথে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমারাও একদনি সেই উন্নত জায়গাতেই পৌছে যাবো সে পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যেতে হবে। আর তাই দেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রগরিতর ধারাবাহিকতার জন্যই বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা জরুরি।
আজ রবিবার শেরে বাংলানগর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সভা কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
এডিপি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে গত পাঁচ মাসে সর্বকালের সর্ববৃহৎ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা এ বছর এডিপি পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়নে স্বার্থক হবো। ফলে জিডিপি ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩০ হবে। ২০২১ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ৩ বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ১০ ভাগের কাছাকাছি। আমরা যদি ১০ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি তাহলে উন্নয়নের হাত ধরে আমাদের দারিদ্রের হার অনেক কমে যাবে, শিক্ষার আরো উন্নতি হবে, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সকল খাতেই বর্তমান সরকার উন্নয়ন রোল মডেল। দেশে এখন বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থানও বাড়বে। রেমিটেন্স প্রবাহ ১৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। সব খাতে উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখলে সব খাতে ভালোভাবে পৌঁছাতে পারবো। শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতেও উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৩০ সালে দেশে দারিদ্র থাকবে না। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা গেলে রেভিনিউ কালেকশন কলেবর বাড়তো। গত ১০ বছরে কর্মসংস্থান বেড়েছে, সামনে আরো বাড়বে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এবং এটি সৃষ্টি হবে শুধু ফরমাল খাতে। পাশাপাশি আমারা প্রতিষ্ঠা করছি ১০০টি স্পেশাল ইকনোমিক জোন। এগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের কর্মসংস্থান অত্যন্ত গতিশীল হবে, বিদেশী কর্মসংস্থান ব্যাপক হারে চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সেবা খাত অনেক বিকশিত, এই সেবা খাতের বা আইসিটি খাতের মাধ্যমে আরো অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারব। আমাদের আইসিটি খাতের শক্তিশালী ভিত্তি আমরা ইতমধ্যে তৈরী করে ফেলেছি। আগামীতে এটি পূর্ণমাত্রায় বিকশিত হয়ে আরো বেশী গতিশীল হবে- যার মাধ্যমে অর্থনীতি আরো বেশী বেগবান হবে।
ব্যাংকিংখাত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এখাতে সরকারের কিছু ওভার সাইড দুর্বলতা রয়েছে। এইকারণে আর্থিকখাতের সমস্যা হয়েছে। সরকার সকল বাঁধা দূর করে প্রবৃদ্ধি অর্জন বাড়াতে চায় তাই আগামীতে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী যে কোন খাতকে ঢেলে সাজানো হবে বা সংস্কার করা হবে।