ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে গভর্নিং বডি।
আজ বুধবার রাতে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান গোলাম আশরাফ তালুকদার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া বুধবারের স্থগিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা আগামী শুক্রবার নেওয়া হবে এবং রবিবার থেকে সব ক্লাস-পরীক্ষা চলবে বলে গভর্নিং বডির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গভর্নিং বডির জরুরি সভায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি সবাইকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। আগামী দুই বা তিনদিনের মধ্যে নতুন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা গভর্নিং বডির পদত্যাগ দাবি করছে- এ বিষয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সব অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ গভর্নিং বডির কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির একটি স্কুলের গভর্নিং বডির সব সদস্যের পদত্যাগ। এ দাবির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে বডির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব। গভর্নিং বডির পদত্যাগে স্কুল যেন নেতৃত্ব শূন্য না হয় সে বিষয়ে আলোচনা করব।’
অরিত্রির মৃত্যুর দায় কার? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক কেউ দায়মুক্ত নয়।’
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৫টায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রীর আত্মহননে অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়ে বৈঠকে বসে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে অরিত্রি অধিকারী।
অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা বাবা দিলীপ অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। গত রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি দেয়ার) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এ অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।'