Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছেলেকে কাফনের কাপড় পড়িয়ে লাশ নিয়ে বেরিয়ে এলেন বাবা

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৩ PM
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৫৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


রুমের ভেতরে তিন বছরের ছেলেকে কাফনের কাপড় পরিয়ে টি টেবিলের ওপর রেখেছেন বাবা নুরুজ্জামান। আর বড় সন্তানকে বুকে জড়িয়ে হাতে রামদা নিয়ে বসে আছেন। নিহত শিশুটির নাম নূর সাফায়েত।

এ ঘটনায় বুধবার দুপুর ২টার দিকে পুলিশ তাকে আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। এ সময় নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাজধানীর বাংলামোটরের লিংক রোডের ১৬ নম্বর বাড়িতে ঘটে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

বুধবার সকালে ওই বাসায় এক বাবা তার দুই শিশুসন্তানকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন—এমন সংবাদে বাসাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পর র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন।

র‌্যাব ২–এর এসআই শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি- শিশুটির বাবা বসে আছেন, তার পাশে একজন হুজুর বসে আছেন। শিশুটিকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো একটি টেবিলের ওপর রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বড় সন্তানকে বুকে জড়িয়ে হাতে বড় রামদা নিয়ে বসে আছেন।

শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের কারও সাহায্য লাগবে না। আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা ১টার দিকে আমি নিজে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।

নুরুজ্জামানের ভাই উজ্জ্বল জানান, বাংলামোটরের এ বাসায় দুই শিশুসন্তান সাফায়েত ও সুরায়েতকে নিয়ে থাকেন তার ভাই। এ ছাড়া তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাসখানেক আগে তার স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। আজ সকালে তার ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা গেছে বলে মসজিদে গিয়ে ঘোষণা দিতে বলেন কাজল। তার পর মাদ্রাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তার সঙ্গে যান।

গত কয়েকদিন ধরে জন্ডিসে আক্রান্ত ছিল ছোট ছেলে সাফায়েত। স্বজনদের ধারণা, জন্ডিসের কারণে বুধবার সকালে সাফায়েত মারা গেছে।

নুরুজ্জামানে মা আমেনা বেগম বলেন, ‘সকালে আমার ছেলে ফোন করে বলল, তোমার নাতি নাই। আমার নাতির জন্ডিস হইছিল। ডাক্তারও দেখাইছে। আমার ছেলে ওরে মারে নাই। আপনারা ভুল বলছেন।’

ছোট ছেলে সাফায়েতের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘বাসার ভেতরে সবকিছু ভাঙাচোরা, এলোমেলো। এগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে না কীভাবে মারা গেছে। পোস্টমর্টেম না করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

কোনও রক্তের দাগও প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়নি। এখানে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তার বাবাকে আটক করা হয়েছে। ভিকটিম ও আটককৃতদের ব্যক্তির বাবা-ছেলে সম্পর্ক। নিশ্চিত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। আমরা পুরো বিষয়টা মানবিকভাবে প্রমাণ সাপেক্ষে দেখতে চাই।’

Bootstrap Image Preview