আমাদের দেশে এখন সুইসাইড করার প্রবণতা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। আর সুইসাইডের পিছনের সবচেয়ে বড় কারণ ডিপ্রেশনে থাকা। আমরা অনেকেই ডিপ্রেশনে থাকা মানুষটাকে বুঝতে চাই না কিংবা তাকে বুঝাতে চাই না।
ডিপ্রেশনে থাকা মানুষগুলোর ডিপ্রেশনের লেভেল সবচেয়ে বেড়ে যায় রাতের ঘড়ি কাটায় যখন সময় বাড়ার সাথে সাথে আশে পাশের মানুষরা ঘুমিয়ে পড়ে ঠিক তখন।
একজন মানুষ ডিপ্রেশনে যেকোন সময় পড়তে পারে। কেউ কেউ ডিপ্রেশনে ভুগে ভার্সিটি লাইফে যেয়ে, কেউবা ভুগে তার রিলেশনে উত্থান পতন নিয়ে আবার কেউ তার কাজের ব্যস্ততা, সংসার এসব নিয়ে।
প্রত্যেকটা ডিপ্রেশনের পিছনে কারণ থাকে নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ অথবা জীবনটা হঠাৎ করে অন্য দিকে মোড় নেওয়া। ভার্সিটি লাইফের শুরুতে সবাই আমরা কম বেশি হোচট খাই খাপ খাওয়াতে যেয়ে এই জীবনটার সাথে। যারা কম মিশতে পারে মানুষের সাথে, কম কথা বলে মানুষের সাথে তারা এককোণায় পড়ে থাকে। নিজেদেরকে এই জীবনের সাথে মানিয়ে উঠতে না পেরে ডিপ্রেশনে চলে যায়। আবার যারা রিলেশনে থাকে, তাদেরকে তার জীবনসঙ্গী এটা করা যাবে না, এভাবে চলা যাবে না অথবা একটা "না" এর লিস্ট ধরে দেয় তার হাতে, সেই মানুষটা যেমন না তেমন হতে গেলে তার নিজের স্বত্তাকে তখন মেরে ফেলতে গিয়েও অনেকে ডিপ্রশনে পড়ে যায়। মারাত্মক কাজের চাপ, সংসারে হাজারটার সমস্যার সাথে নিজেকে না মেলাতে না পেরেও অনেকে ডিপ্রেশনে চলে যায়।
ডিপ্রেশনকে অনেকই হাস্যকর, পাগলের রোগ, ন্যাকামি এসব বলে উড়িয়ে দেয়, আর তাতেই বাধে সমস্যা। যেই মানুষটা ডিপ্রেশড থাকে সে নিজেকে একা মনে করে, অসহায় মনে করে আর যখন সে দেখে তার চারপাশের মানুষ তার সাথে ভালো ব্যবহার না করে খারাপ আচরণ কিংবা অবহেলা করা শুরু করে তখনি শুরু হয় তার পায়ের নিচে মাটি সরে যাওয়া। সে একাকি নিজেকে গুটিয়ে নিতে নিতে সুইসাইডের মতো একটা কাজ করে বসে।
ডিপ্রেশনে থাকা মানুষগুলোকে নরমাল লাইফে এই আমরাই ফিরিয়ে আনতে পারি। আমরা চাইলেই তাদের কথাগুলো শুনতে পারি। তারা তাদের মনের কথাগুলো বলার মানুষ পায় না দেখেই ভিতরে ভিতরে নিজে শেষ হয়ে যায়। তাদের কান্না, তাদের একাকীত্ব, তাদের মন খারাপকে উড়িয়ে না দিয়ে তাদের পাশে একটু সুন্দর মতো কথা বলে সময় কাটালেই দেখবেন সে অনেকটা ভালো হয়ে গেছে।
আমি আপনি হয়তো জানবোও না এই সুন্দর সময়টুকুর জন্যই হয়তো কারো জীবন আমরা বাঁচিয়ে দিয়েছি।
সুইসাইড করে ডিপ্রেশন কাটানো যায় না, প্লিজ নিজের ডিপ্রেশন কাছের মানুষের সাথে শেয়ার করি আর নিজের জীবনটাকে অনেক সুন্দর করি।
লেখক: বিডিমর্নিং এর নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি