Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিশ্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির যে তালিকা দেখে অবাক হবেন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৪ PM
আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


বিশ্ব ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিগুলোর তালিকা করে থাকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। প্রতিবছর সেই তালিকায় বিশ্বের নানা সাংস্কৃতিক অনুসঙ্গ যোগ হয়। ইউনেস্কোর সেই তালিকায় রয়েছে অবাক করার মতো অনেক কিছু।

রেগে সঙ্গীত :

জ্যামাইকায় উনিশশো ষাটের দশকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘রেগে’ সঙ্গীতকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউনেস্কো, যা এ সঙ্গীতকে রক্ষা এবং পরিচিত করে তোলার জন্য ভালো উদ্যোগ বলে মনে করা যেতে পারে। এই উদ্যোগের দশম বর্ষপূর্তিতে রেগে সঙ্গীত তালিকাভুক্ত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো- সংস্কৃতির এসব দিক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা।

রেগে হচ্ছে মূলধারার জনপ্রিয় একটি সঙ্গীত। এর আগে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বব মারলে বা জিমি ক্লিফের মতো সঙ্গীত শিল্পীরা।

ক্যাটালান মানবস্তম্ভ :

ক্যাটালোনিয়া এবং স্পেনের আরো কয়েকটি অঞ্চলে মানব শরীরের পিরামিড বানানোর রীতি রয়েছে, যা ১৭০০ শতক থেকে চলে আসছে। তারা এভাবে নারী, পুরুষ এবং শিশুরা মিলে একজনের ওপর আরেকজন দাঁড়িয়ে দশ তলার সমান পিরামিড তৈরি করে। হুরলিং হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের এক ধরনের খেলা, যা দেখে মনে হবে ফুটবল, রাগবি আর হকির একটি মিশ্রণ। প্রায় চার হাজার বছর ধরে আয়ারল্যান্ডের এই খেলা চলে আসছে।

খেলাটি লম্বা একটি লাঠি দিয়ে খেলা হয়, গোলপোস্ট আছে এবং ছোট একটি বল আঘাত করে, লাথি মেরে অথবা হাত দিয়ে খেলা হবে। ভালোমতো আঘাত করতে পারলে এই বলের গতি হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় দেড়শ কিলোমিটার।

তুরস্কের ‘পাখি ভাষা’ :

তুরস্কের উত্তরাঞ্চলের কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী একটি গ্রামের বাসিন্দারা উন্নতমানের এক ধরনের শিস দেয়ার পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে অনেক দূরে যোগাযোগ করা সম্ভব। তবে মোবাইল প্রযুক্তির সম্প্রসারণের কারণে এই রীতি এখন খানিকটা হুমকির মুখে পড়েছে। তবে ‘পাখি ভাষা’ নামে পরিচিত এই রীতিটি ২০১৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হয়েছে।

নেপলসের পিৎজা :

ইউনেস্কোর তথ্য মতে, ইতালির শহর নেপলসে ৩ হাজারের বেশি পিৎজাইওলি বা পিৎজা শিল্পী বাস করেন। তাদের এখনকার প্রধান পেশা হচ্ছে মূলত নবীনদের পিৎজা বানানো শেখানো। সুতরাং বলা যেতে পারে, বিশ্বের পিৎজা তৈরির শিল্প কোন না কোনভাবে নেপলসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।

আদিবাসী সরকার :

ইথিওপিয়ার ওরোমো আদিবাসী গোত্রের লোকজন এখনো তাদের প্রথাগত শাসন পদ্ধতি ধরে রেখেছে, যাকে বলা হয় ‘গাডা’। এই পদ্ধতিতে তাদের নিয়মমাফিক তাদের নেতা পরিবর্তিত হয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ড তাদের নিজেদের প্রাচীন রীতিনীতি অনুসরণ করে করা হয়।

গাছে ওঠা ছাগল এবং বীজ :

চুলের জন্য খুবই উপকারী বলে জনপ্রিয় অরগান তেল আসে মরক্কোর স্থানীয় একটি গাছের ফল থেকে, যে গাছের বীজ তৈরি হয় ওই গাছে ওঠা ছাগলের মাধ্যমে। গাছ থেকে যেকোনো সময়ই ফল আহরণ করা যেতে পারে। কিন্তু বহু কাঙ্ক্ষিত এই তেলের জন্য চাষাবাদ করতে হলে বীজ দরকার হবে, আর সেই বীজ তৈরি হবে যদি কোন ছাগল গাছটিতে ওঠে। স্থানীয় রীতি এবং অর্থনীতির দিক বিবেচনা করে ২০১৪ সালে এটিকে ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত করা হয়।

সূর্যের জন্য অপেক্ষা :

সূরি যাজেক হচ্ছে পাকিস্তানের আদিবাসী কালাশ গোত্রের মানুষজনের প্রথাগত আবহাওয়া এবং জ্যোতিষ চর্চার একটি ধরন। সূর্য, চন্দ্র এবং তারার অবস্থান পর্যালোচনা করে তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেমন কখন তাদের চাষাবাদের মৌসুম শুরু হবে বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর দিনক্ষণ কি হবে? এমনকি গৃহপালিত পশুর মিলন কখন ঘটানো হবে, সেটাও নির্ভর করে এই রীতির ওপরে।

গভীর সমুদ্রের নারীরা :

দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে একটি সম্প্রদায় রয়েছে, যেখানে নারীরা সমুদ্রের ১০ মিটার গভীরে গিয়ে ঝিনুক সংগ্রহ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু কেউ কোন অক্সিজেন বোতল বা মাস্ক ব্যবহার করেন না। এমনকি তাদের অনেকের বয়স আশি বছর।

চীনের পুঁতি :

এই পুঁতি বা জপমালার আসলে জন্ম কোথায়, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু প্রাচীনকাল থেকে গণনার যন্ত্র হিসাবে পুঁতির বিস্তার হয়েছে চীনে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মৌখিকভাবে চলে আসা সহজ সূত্রের ভিত্তিকে এই পুঁতি ব্যবহার করে সাধারণ হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে জটিল হিসাবও করা যায়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় যহুসুয়ান, যা এখনো চীনে ব্যবহার করা হয় এবং শেখানো হয়।

Bootstrap Image Preview