দরজায় টোকা মারলেই বেরিয়ে আসছেন কোনও যুবক বা যুবতী। তাদের মধ্যে কয়েকজন যথেষ্টই অস্বস্তিকর অবস্থায়। ক্যামেরা দেখে কেউ বাথরুমে লুকিয়ে পড়লেন, কেউ কাপড়ে মুখ ঢাকলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ে অবস্থিত সরকারি ভবন ‘পথের সাথী’র ছবিটা এমনই।
ভবনের ম্যানেজার এবং কেয়ারটেকার বলেন, অনেকদিন ধরেই ‘পথের সাথী’তে চলছে মধুচক্রের জমজমাট আসর।
স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন এ নিয়ে সরব। তাদের অভিযোগ, দু’বেলা সরকারি ভবনে ঘর ভাড়া নিয়ে চলছে মধুচক্রের কারবার। অথচ কিছুই নাকি জানে না পুলিশ।
সব শুনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলাশাসকের দাবি, অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নের উপরে জোর দিয়েছেন। সেই কারণে পর্যটনস্থলে যাওয়া আসার পথে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ‘পথের সাথী’ নামে বহু সরকারি ভবন বানিয়েছেন। এই রকমই সরকারি ভবন তৈরি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। মহকুমাশাসকের দফতরের ঠিক পাশেই রয়েছে এই সরকারি ভবন।
অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরুষ ও মহিলারা এই সরকারি ভবনে ঘণ্টাভিত্তিক চুক্তিতে ঘর ভাড়া নিয়ে মধুচক্রের আসর বসাচ্ছে।
শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে এই সরকারি ভবনে হানা দিয়ে দেখা গেল একাধিক পুরুষ ও মহিলা অসংলগ্ন অবস্থায় রয়েছে।
জানা যায়, ভবনি সরকারি হলেও এজেন্সির মাধ্যমে মহকুমা প্রশাসন এটি পরিচালনা করে। লিজ নেওয়া সেই এজেন্সিই বেশি মুনাফার আশায় এই অনৈতিক ব্যবসা ফেঁদেছে বলে দাবি করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু মহকুমাশাসকের দফতরের নাকের ডগায় কীভাবে এই কারবার চলছিল, সেই প্রশ্ন উঠছেই। সাধারণ মানুষের চোখে পড়লেও, অনৈতিক কারবার পুলিশ, প্রশাসনের চোখ কীভাবে এড়িয়ে গেল, সেই প্রশ্নেরও সদুত্তর নেই।
সব শুনে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।