Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মুসলিম বন্ধুকে কিডনি দিয়ে বাঁচাতে আদালতে শিখ তরুণী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:২৮ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৩১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সহিংসতায় জরাজীর্ণ জম্মু ও কাশ্মিরে বন্ধুত্বের মর্মস্পর্শী নিদর্শন এটা। মরণাপন্ন মুসলিম বন্ধুকে বাঁচাতে মানবতার নতুন নজির তৈরি করলেন উধমপুরের ২৩ বছরের শিখ তরুণী মনজ্যোৎ সিংহ কোহলি।

প্রাণের বন্ধু ২২ বছরের সমরিন আখতারকে নিজের একটি কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার এই সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার নিজেরই পরিবার। অযথা দেরি করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সে কারণে কিডনি দেওয়ার ছাড়পত্র জোগাড় করতে শেষ পর্যন্ত আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন শিখ তরুণী।

ওই তরুণী সাংবাদিকদের বলেছেন, সমরিন আমার চার বছরের পুরনো বন্ধু। ও খুব ভালো বন্ধু হলেও ভেতরে ভেতরে এতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তা জানায়নি আমাকে। অন্য একজন বন্ধু আমাকে বিষয়টি জানায়। আমার খারাপ সময়ে পাশে ছিল সমরিন। এখন ওর খারাপ সময়। তাই পাশে দাঁড়ানোটা আমার কর্তব্য। ওর অসুস্থতার কথা শোনার পরই আমি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।

এই কঠিন সিদ্ধান্ত তিনি সহজে নিয়ে ফেললেও বাকি কাজটা খুব একটা সহজ হচ্ছে না মনজ্যোতের কাছে। প্রথম বাধা এসেছে পরিবারের কাছ থেকে। কিন্তু তাতেও থামানো যায়নি ওই শিখ তরুণীকে। বন্ধুকে বাঁচানোর রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।

তিনি জানান, কিডনি দিতে বাধা দিচ্ছে ‘শের-ই-কাশ্মির ইনস্টিটিউট বি মেডিক্যাল সায়েন্সেস’। অঙ্গদানের প্রাথমিক ছাড়পত্র পেলেও সেই প্রক্রিয়া কিছুতেই শুরু করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই আমি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মনজ্যোতের কাছ থেকে বন্ধুত্বের এই উপহার পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন সমরিনও। তিনি জানান, মনজ্যোতকে ধন্যবাদ জানানোর কোনো ভাষা আমার জানা নেই। ওর কথা শুনে আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি। তার পর সে আমাকে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। তার এই সিদ্ধান্তে পাল্টে গেল আমার গোটা জীবনটাই।

আপাতত মনজ্যোতের চিন্তা, মেডিক্যাল ছাড়পত্র থাকলেও কিডনি দান করা কেন যাচ্ছে না, তা নিয়ে। কারণ, এই টালবাহানায় আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে সমরিনের শরীরের অবস্থা। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ‘শের-ই-কাশ্মির ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস’-এর অধিকর্তা ওমর শাহ।

কোনো কোনো মহলের মতে, একজন শিখ তার মুসলিম বন্ধুকে কিডনি দিচ্ছেন, তা মেনে নিতে পারছেন না চিকিৎসকদের একাংশ। সে কারণে আগ বাড়িয়ে বাধা তৈরি করছেন তারা।

কেউ আবার বলছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অনুমতি না মেলাতেই অঙ্গদান করতে দেওয়া হচ্ছে না মনজ্যোতকে। যদিও সে সবে গুরুত্ব দিতে নারাজ তিনি।

তিনি বলেন, আমি জানি, আমার পরিবার হাসপাতালে নোটিস পাঠিয়েছে। তারা কোনো দিনই অনুমতি দেবে না। কিন্তু আমি এক জন প্রাপ্তবয়স্ক। আমার পরিবারের অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

Bootstrap Image Preview