দেশে দেশে এখন শরণার্থী ছুটে বেড়াচ্ছেন। গৃহযুদ্ধ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে দেশে দেশে অসংখ্য মানুষ ঘরছাড়া হয়ে প্রাণ বাঁচাতে অন্য দেশে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা, সিরিয়া, ইয়েমেন-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশের মানুষ, গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষপীড়িত আফ্রিকার বহু দেশের মানুষ এভাবেই এখন শরণার্থী হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন।
বহু দেশই এদের আশ্রয় দিতে নারাজ। দিলেও শরণার্থীদের রাখা হচ্ছে অস্থায়ী শিবিরে, সাধারণ মানুষের প্রাপ্য ন্যূনতম আইনি অধিকারও তারা পাচ্ছেন না।
বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের এই সঙ্কটের মোকাবিলায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আলোচনায় বসে। ঠিক হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ শরণার্থীদের আশ্রয়, জীবিকা ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত বোঝাপড়া সেরে ফেলে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে। কিন্তু সত্যিই কি তাতে পশ্চিমী দুনিয়ার ধনী দেশগুলো সায় দেবে?
শরণার্থীদের কেন্দ্র করে এই বিশ্বজোড়া সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে কলকাতা রিসার্চ গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথম দিন থেকেই এই আশঙ্কার সুর অংশগ্রহণকারী বক্তাদের কথায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ লরেন্স জুমা, কলকাতার নামী সমাজবিজ্ঞানী রনবীর সমাদ্দার থেকে শুরু করে নেপালের বুধা সিংহ কেপাছাকিসহ অনেকের কথাতেই সংশয় স্পষ্ট, জাতিসংঘ কি পারবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ধনী দেশগুলোকে রাজি করাতে?
ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপের উদ্যোগে পাঁচদিন ধরে কলকাতায় যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে, সেখানে শরণার্থীদের সমস্যা ও তা নিরসনের উপায় খুঁজতে বহু দেশের বিশেষজ্ঞ সমাজবিজ্ঞানী, মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক জড়ো হয়েছেন। রয়েছেন ইসরায়েল থেকে ডেভিড নিউম্যান, ফিলিস্তিন থেকে লুসি নুসিবিয়ে, কানাডা থেকে জেনিফার হাইন্ডম্যান ও উইলিয়াম ওয়ালটার্স, বাংলাদেশ থেকে মেঘনা গুহঠাকুরতা, যুক্তরাষ্ট্রের মাটান কামিনের, সিঙ্গাপুরের ইতি আব্রাহামরা।
ব্রাজিল, পর্তুগাল, শ্রীলঙ্কা, সার্বিয়ার গবেষকরা এসেছেন তাদের গবেষণালব্ধ তথ্য ভাগ করে নিতে। কলকাতা তথা ভারতেরও বহু সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী, পলা ব্যানার্জি, ইলিনা সেন প্রমুখ।