সাদেক সালেহ ও স্ত্রী জ্যাকি সালেহ। বসবাস করত যুক্তরাজ্যের কার্ডিফে। ইয়েমেন থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া সাদেক সালেহর সঙ্গে জ্যাকির পরিচয় হয় এক ডিস্কোতে। সেই থেকে প্রেম অতঃপর বিয়ে।
সত্তরের দশকে এই দম্পতি সংসার শুরু করেন। সংসারজীবনে তিন কন্যার জন্ম হয় তাদের। কিন্তু সেই তিন কন্যার কেউ এখন যুক্তরাজ্যে নেই। নেই জ্যাকি সালেহর স্বামীও। ফলে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত এই নারী ঘুমালেই শুনতে পান তার মেয়ের চিৎকার, আর্তনাদ।
স্বামী অতিরিক্ত মদপান করতেন বলে ১৯৮৬ সালে ডিভোর্স চেয়েছিলেন জ্যাকি। এর জের ধরে সাদেরক তিন পেয়েকে নিয়ে পালিয়ে ইয়েমেন চলে যায়।
বাবা যখন কন্যাদের নিয়ে যায় তখন বড় মেয়ে রাহান্নাহর বয়স ছিল পাঁচ বছর। তার এক বছরের ছোট ছিল মেজ মেয়ে নাদিয়া। আর ছোট মেয়ে সাফিয়া ছিল মাত্র ১৮ মাস বয়সী।
সন্তান হারানোর পর দীর্ঘদিন ধরে দুঃসহ সময় কাটিয়েছে জ্যাকি। সন্তানদের অভাবে তার জীবন হয়ে উঠেছিল বিভীষিকাময়।
জ্যাকি জানান, ২০০১ সালে হঠাৎ করেই একটি চিঠি এল। আমার হৃৎপিণ্ড কেঁপে উঠল। দেখলাম চিঠিটি ছিল বড় মেয়ে রাহান্নাহর। আমি ওই বছরই ইয়েমেনে যাই।
দীর্ঘ সময়ে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে। রাহান্নার বয়স ২১। নাদিয়ার ১৯। তারা মুসলিম। নেকাব পরত। রাহান্না জানায় সে কখনোই আমাকে ভুলেনি এবং আমাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা কখনো বন্ধ করেনি।
ইতিমধ্যে তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। রাহান্নার দুটি সন্তান। তবে ২০০৭ সালে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেল নাদিয়া। একই বছর তাদের বাবাও মারা গেল।
ইয়েমেনের হোদেইদা শহরে চার সন্তান নিয়ে বাস করে সাফিয়া; যেখানে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ করছে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী। হোদাইদায় লড়াই ক্রমশ বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে তাদের যুক্তরাজ্যে নেয়ার দাবি জানিয়েছে জ্যাকি সালেহ। তিনি বলেন, সে ব্রিটিশ নাগরিক যাকে অবৈধভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে জন্য আমি ব্রিটিশ সরকারের কাছে অনুরোধ করছি। তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনুন। চোখ বন্ধ করলেই আমি তার চিৎকার শুনতে পাই।