Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে দুই বোনকে ধর্ষণ করলো ভণ্ড কবিরাজ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৮ PM
আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৮ PM

bdmorning Image Preview


গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে এক ভণ্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে একই পরিবারের দুই বোনকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) বাবা হারা ওই দুই মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ করেন তাদের মা। পরে এলাকাবাসী ভণ্ড কবিরারজ ও তার সহযোগিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

জানা যায়, গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ওই দুই বোনের একজনকে বিয়ের নাটক করে, আর প্রতিবন্ধী অপরজনকে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার নাম করে ধর্ষণ করে।

ভণ্ড কবিরাজ নজরুল ইসলাম ওরফে নজরুল ফকির (৫০) নাটোরের লালপুর উপজেলার বড়বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ইয়ার উদ্দিন মোল্লার ছেলে ও তার সহযোগি একই উপজেলার আব্দুলপুর পশ্চিমপাড়ার আরশেদ আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৩৭)।

নির্যাতিত পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে সহযোগী আব্দুস সালাম প্রথম তার প্রতিবন্ধী ফুপাত বোনের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কবিরাজ নজরুলকে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড়ে ফুপুর বাড়িতে নিয়ে আসে। সে সময় টোটকা চিকিৎসা দেওয়ার ফাঁকে কুদৃষ্টি পড়ে ওই প্রতিবন্ধীর মেঝো বোন ডিগ্রিপড়ুয়া মেধাবী ছাত্রীর ওপর। এরপরই গুপ্তধনের ফাঁদ পাতে নজরুল। প্রতিবন্ধী ওই নারীর পরিবারকে সে জানায়, তাদের ঘরের মেঝেতে মাটির নিচে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের গুপ্তধন রয়েছে। ওই সম্পদ শুধুমাত্র নজরুল ফকিরই উদ্ধার করে দিতে পারবে। ওই পরিবারটিতে এমন বিশ্বাস তৈরি করে কবিরাজ।

এরপর ওই মেঝেতে তৈরি করা হয় আসন। সেখানে ধ্যানের ভান করে নিয়মিত তপস্যার নাটক চালিয়ে যেতে থাকে কবিরাজ নজরুল। ধ্যানের সময় গভীর রাতে জ্বালিয়ে রাখা হত আগরবাতি, মোমবাতি। আর প্রতিবন্ধী নারীর পুরো পরিবারের সদস্যদের বসিয়ে রাখা হতো আসনের সামনে। সেখানে তৈরি হতো তাবিজ। সেই তাবিজ দিয়েই চলত শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা।

এভাবে চলে বছর খানেক। সুযোগ বুঝেই শর্ত আরোপ করে কবিরাজ। ডিগ্রিপড়ুয়া সেই মেয়েকে তার (কবিরাজ) সঙ্গে বিয়ে দিলেই কেবল পেতে পারে গুপ্তধন। এমন আরও কৌশল অবলম্বন করে মাকে বাধ্য করে বাবাহারা মেয়েকে নাটক করে বিয়ে করে সেই কবিরাজ।

বিয়ের মাত্র মাস দুয়েক পর কবিরাজের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতিবন্ধী মেয়েটির ওপর। শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার নামে কবিরাজের সঙ্গে রাতযাপনে বাধ্য করে মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে। সকালে পরিবারের সবাই জানতে পারে তাকে উপর্যপুরি ধর্ষণের ভয়ানক ঘটনা। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসব ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা।

পরে শনিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে চিকিৎসার নামে আসনে বসার খবর টের পেয়ে এলাকাবাসী বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এলাকাবাসীরা তাকে মাটি খুঁড়ে গুপ্তধন বের করতে বলে। তখন ভণ্ড কবিরাজ নজরুল নিজেই তার পাতা আসনের সামনে ঘরের মেঝেতে মাটি খুঁড়তে থাকে। কবর সমান মাটি খুঁড়েও কোনো গুপ্তধন না পেয়ে এলাকাবাসী তাকে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে আটকে রাখে। জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইয়াসিন আলী পুলিশে খবর দেন। পরে বাগাতিপাড়া মডেল থানা পুলিশ খবর পেয়ে ভণ্ড নজরুল ফকির ও তার সহযোগী আব্দুস সালামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, এখনো কেউ মামলা করেনি। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview