Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতেই ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তে অটল ইসি’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০১:২৮ PM
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০১:২৮ PM

bdmorning Image Preview


ভোটার শুন্য নির্বাচন করতে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতেই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তে অটল নির্বাচন কমিশন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব এ্যডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।

শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযালয়ে আয়োজীত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে গতকাল নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কর্মকর্তারা একজোট হয়ে বৈঠক করেছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বৈঠকের আলোচনায় মনে হয়-বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন থেকে কিভাবে দমন করে চাপিয়ে রাখা যায়, তারই মহাপরিকল্পনা হয়েছে সেখানে। তাদের আলোচনায় এটি অত্যন্ত সুষ্পষ্ট যে, দলীয় চেতনায় সাজানো পুলিশ কর্মকর্তাদের কোন নড়চড় করবেন না নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ সরকারের অনুকুলেই সমতল ভূমি নির্মান করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে ইসি। আর সেইক্ষেত্রে পুলিশ অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে না হয়। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ঐক্যফ্রন্টের বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

কোন দল বা জোট কতটা সংগঠিত হচ্ছে, এটার জন্য পুলিশের এতো মাথাব্যথা কেন? সতর্ক নজর রাখতে হবে কেন? রাজনৈকিক দলের কাজই তো জনগণকে সংগঠিত করা। কেন সেই এসপি ক্ষমতাসীনদের হাতে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের স্তুপের কথা বলেন নি? প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের নিম্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী কর্তৃক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরেও কেন নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি? গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য পুলিশের ভয়ঙ্কর দমনের প্রবণতাকে উস্কে দিবে। বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের লাশ নদীতে ভেসে উঠছে, মিথ্যা অথচ এসব বিষয়ে তো কোন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে কোন বক্তব্য উত্থাপন করেননি যোগ করেন রিজভী আহমেদ।

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সরকার সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করছে। এই ব্যবহার হচ্ছে বেপরোয়া ও নির্বিচারভাবে। প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে ‘বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক’ সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় একশো কোটি টাকার কম্বল দাবি করেছে। গত ২০ নভেম্বর ব্যাংক এ্যাসোসিয়েশনের এক সভায় সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে আগামী ২৭ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নমূনা কম্বল এবং পরের পনের দিনের মধ্যে পুরনো ব্যাংকগুলোর কাছে ৫০ হাজার এবং নতুন ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৫ হাজার কম্বল চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে ত্রাণের নামে ব্যাংকগুলোর কাছে কম্বল দাবি নির্বাচনী আচরণবিধির পুরোপুরি লঙ্ঘন। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ব্যাংক মালিকগুলোর কাছে চিঠি পাঠানোর ফলে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে না। নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে পারিবারিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছে প্রধানমন্ত্রী। আমরা এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।  

এসময় তিনি বলেন, শাসন ও পুলিশে কর্মরত বির্তর্কিত ও দলবাজ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গতকাল নির্বাচন কমিশনের বরাবরে আবেদন করলে সিইসি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সভায় বলেছেন কোন কর্মকর্তাকে বদলী করা হবে না। বিরোধী দল গুলোর পক্ষ থেকে বির্তকিতদের সরানোর আহবানের বিপরীতে সিইসির এ ধরণের বক্তব্যে দলবাজ কর্মকর্তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলবে। গতকাল নির্বাচন ভবনে উচ্চ পদস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে নির্বাচন কমিশনরে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নির্দেশসমূহ এবং উপস্থিত কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যে মনে হয় উভয় পক্ষই সরকারের অনুকুলে একতরফা নির্বাচনেরই একটা গোপণ ছক তৈরি করে রেখেছে।

আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায়  নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, সারাদেশজুড়ে গ্রেফতার, হামলা নির্যাতন থামছেই না। গতকাল আপনারা দেখেছেন নারায়নগঞ্জে শামীম ওসমান বিশাল প্রচারণা সভা করেছে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নাজমুল হাসান পাপনের পক্ষে মাইকিং করে সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া সকল জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মিছিল করে, সমাবেশ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ঘরোয়া বৈঠক করতে চাইলে সেখানে চলছে সশস্ত্র হামলা। বিএনপির লোক ঘরের ভিতর সভা করতে পারছেন না অথচ আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের চোখের সামনে বড় বড় সমাবেশ করছে, নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে সারাদেশ আওয়ামী লীগের ফেস্টুন, ব্যানার ও পোষ্টারে ছেয়ে গেছে।

Bootstrap Image Preview