মতলব উত্তর উপজেলার রায়েরদিয়া গ্রামে কবর দেওয়ার এক মাস পাঁচ দিন পর পোস্টমর্টেম এর জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শুভাশিস ঘোষের নেতৃত্বে লাশ উত্তোলন করে চাঁদপুর জেলা পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)।
চাঁদপুর পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মীর মোঃ মাহবুব বলেন, গত ২৪ অক্টোবর নিহত স্কুল ছাত্রী খাদিজার পিতা ছাব্বির আহমেদ বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে মামলা হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত পিবিআইকে মামলার তদন্তভার দেন। মামলা তদন্তের স্বার্থে পোস্টমর্টেম করার জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া, এসআই ফরিদ উদ্দিন, এসআই জাহাঙ্গীর, এসআই জয়নাল ও এসআই আল হেলালসহ কর্মকর্তাবৃন্দ।
সার্বিক আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ছিলেন, মতলব উত্তর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই গোলাম মোস্তফা।
মামলায় আসামি করা হয়, পশ্চিম রায়েরদিয়া গ্রামের আঃ কাদির প্রধানের ছেলে খাদিজার মামা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন (৪২), তার স্ত্রীর অহিদা বেগম (৫৫), একই বাড়ির মোহাম্মদ এর ছেলে অলি উল্লাহ (৫০), ইসলামাবাদ গ্রামের মোহাম্মদের ছেলে টিপু (৩৫), পশ্চিম রায়েরদিয়ার আঃ কাদেরের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন (৩০), মেয়ে ছাব্বির আহমেদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৫) ও অলি উল্লাহর স্ত্রী মাসেদা বেগম (৪৮) সহ ৮ জনকে। মামলা নং ১৬৮/২০১৮ইং। বাদীর দাবি খাজিদাকে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও বাদী সূত্রে জানা গেছে, মতলব দক্ষিণ উপজেলার আশ্বিনপুর গ্রামের মনির হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে ছাব্বির আহমেদ (৪৩) এর সাথে মতলব উত্তর উপজেলার পশ্চিম রায়েরদিয়া গ্রামের কাদির প্রধানের মেয়ে বিউটি বেগমের (৩৫) বিয়ে হয় এবং গত ২০০২ সালে তাদের সংসারে খাদিজা নামে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারপর ২০১২ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে খাদিজা নানার বাড়িতে থেকে বড় হয়। সেই থেকে মেয়ের ভরণ পোষণ দিত তার বাবা।
এভাবে চলতে থাকলে বিগত কিছুদিন যাবৎ খাদিজাকে বিশেষ করে ১নং আসামী শারীরিক নির্যাতন করতে চাইত। খাদিজা প্রায়ই তার পিতাকে মুঠোফোনে কল করে তাকে নিয়ে যেতে বলতো। তার পিতা তাকে আশ্বাস করে এবারের জেএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই তাকে নিয়ে যাবে। কিন্তু গত ১০ অক্টোবর তাকে শারীরিক নির্যাতন ও ১নং আসামির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা বলে দিবে বিধায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। এর কারণে খাদিজার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।
এরপর ওই বাড়ির লোকজন খাদিজার পিতাকে মুঠোফোনে জানায় খাদিজা ভ্যাসমল তেল খেয়ে ফেলেছে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা মৃত্যুবরণ করে। পরে তাকে নানার বাড়িতেই দাফন করা হয়েছিল।
এদিকে আসামিপক্ষের সাথে কথা বলার জন্য খোঁজ করলে তাদেরকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেশীরা জানায়, তারা পলাতক রয়েছে। তবে খাদিজার এক মামা আব্দুস সালামের স্ত্রী জানান, খাজিদা ব্যক্তিগত বিষন্নতার কারণে বিষপানে আত্মাহত্যা করেছে।