ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়া পাকিস্তানের খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দিতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করছে কানাডা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ কথা জানিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি থেকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত তাকে খালাস করে দেয়ার আগে আট বছর কারাগারে ছিলেন তিনি। অভিযোগ থেকে তাকে মুক্তি দেয়ার পরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দেশটির ইসলামপন্থীরা। পরবর্তী সময়ে সরকারের সঙ্গে চুক্তির পরেই সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আসিয়া বিবিকে কানাডায় নিয়ে আসা ও আশ্রয় দিতে চায় তার সরকার।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্তানে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। যে কারণে এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, কানাডা একটি আন্তরিক দেশ।
আসিয়া বিবির স্বামী বলেছেন, তাদের পরিবার এখন বিপদে আছে এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।হত্যার হুমকি পাওয়ার পর আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফুল মুলুককে অস্থায়ী শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
আসিয়া বিবিকে অব্যাহতির আদেশের পর শুরু হওয়া সহিংসতা ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পাকিস্তানের সরকার সম্মত হয়েছিল যে, তার বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে তারা পদক্ষেপ নেবে।
বেশ কয়েকটি দেশ তাকে আশ্রয় দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দেয়ার এই সিদ্ধান্তে কানাডার বিরোধী রক্ষণশীল পার্টিরও সমর্থন রয়েছে। তার পরিবারকে আশ্রয় দিতে সব রকম ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে অনুরোধ জানিয়েছে।
একই পাত্রের পানি খাওয়া নিয়ে প্রতিবেশী দুই নারীর সঙ্গে ঝগড়ার সময় নবীজিকে নিয়ে আসিয়া অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনে কোনো অমুসলিম নারী হিসেবে প্রথম দণ্ডিত হয়েছেন পাঁচ সন্তানের মা আসিয়া বিবি। ইসলামকে অবমাননা করার অভিযোগে এ আইনে যে কারও মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।
২০১১ সালে আসিয়া বিবির পক্ষ নেয়ার কারণে পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসিরকে হত্যা করা হয় বলে মনে করা হয়। একই ধরনের মন্তব্যের কারণে পাকিস্তানের সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী শাহবাগ ভাট্টিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।