শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার ভেদরগঞ্জ হেড কোয়াটার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আসন্ন এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকার দাবিতে ফেল করে দেওয়া, ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা দাবি, ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ২.৩০টায় এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের সাথে বাকবিতণ্ডাও হয়েছে। এসময় ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ফি নির্ধারিত করেছে। বিজ্ঞান বিভাগে ১ হাজার ৮৩৫ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ হাজার ৭১৫ টাকা। কিন্তু অনেক বিদ্যালয়ে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে নানা অজুহাতে বাড়তি ফি আদায় করছে।
ভেদরগঞ্জ হেড কোয়াটার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, আমাদের এবারের এসএসসি ২০১৯ ব্যাচের নির্বাচনী পরীক্ষার আগে সিদ্দুকুর রহমান, নজরুল ইসলাম, রনি খান, মোশারফ হোসেনসহ আরো কিছু সহকারী ও প্রক্সি শিক্ষকরা মিলে আমাদের কাছ থেকে ২০০০/- (দুই হাজার) টাকা করে দাবি করে। যার মাধ্যমে আমাদের নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিবে বলেও জানায়। কিন্তু এই টাকা দিতে আমরা অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাদের এবারের নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য করবেন বলে হুমকি দেন।
সেই উদ্দেশ্য সাধনে আমাদের এবারের নির্বাচনী পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য করে দেওয়া হয়। অকৃতকার্যদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার আগের রাতেও ফোন কলের মাধ্যমে টাকা চাওয়া হয়। বিদ্যালয়ের এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বর্তমান ও ভবিষ্যতে সুশিক্ষা অর্জনে কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে আমাদের ধারনা।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী বলেন, কিছু কিছু শিক্ষক ছাত্রীদের নানামুখি যৌন হয়রানি করে থাকেন যা কেউ মুখ ফুটে বলতে পারছে না।
রনি খান নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, রনি স্যার আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রী রোজা, নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জান্নাতের সাথে অশালীন আচরণ করার প্রেক্ষাপটে তাদের বাবা মা, তাদের পড়াশুনা বন্ধ করে তাদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয়। রনি স্যার ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং প্রেগন্যান্ট করার পর তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। শিক্ষক যদি এমন হয়, তাহলে আমরা ছাত্রীরা শিক্ষদের কাছে কিভাবে নিরাপদ থাকবো?
এব্যাপারে রনি খান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন। এটি ফাসানোর একটি উদ্দেশ্য বলে দাবি করেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা আরো জানিয়েছেন, তাদের বিদ্যালয় সরকারি হওয়ার পরও মাসিক বেতন দিতে হয় ৬০০ টাকা করে।
অভিযোগ ভেদরগঞ্জ হেড কোয়ার্টার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রব জানান, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয় নাই। ম্যানেজিং কমিটির সিন্ধান্তে বিদ্যালয় পরিচালনা করা হয়।